ঢাকা সিটি নির্বাচন : দক্ষিণে ‘পরাজিত’ সেই কাউন্সিলরকে জয়ী ঘোষণা

মত ও পথ প্রতিবেদক

ঢাকা সিটি করপোরেশন (দক্ষিণ)
ফাইল ছবি

নিজের এজেন্টদের কাছ থেকে পাওয়া ভোটের হিসেবে এগিয়েছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের শেখ মোহাম্মদ আলমগীর। কিন্তু বিজয়ী ঘোষণা করা হয় অন্য একজন কাউন্সিলর প্রার্থীকে। এ নিয়ে আলমগীর অভিযোগ করেন রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে। এরপর স্থগিত করা হয় ঘোষিত সেই ফলাফল।

রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তর থেকে খোঁজখবর নিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। ইভিএমের ফলাফল তুলতে গিয়ে ভুল করার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা। তাই ইভিএমের ফলাফলকে সত্য ধরে নিয়ে স্থগিত করা ওয়ার্ডে শেখ মোহাম্মদ আলমগীরকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ঝুড়ি প্রতীকের প্রার্থী আলমগীর এই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী ছিলেন।

universel cardiac hospital

সোমবার নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে স্থগিত এই ওয়ার্ডের ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন।

তিনি জানান, এই ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী কাউন্সিলর প্রার্থী শেখ মোহাম্মদ আলমগীর (ঝুড়ি) ২৪৭২ ভোট, জুবায়েদ আদেল (টিফিন ক্যারিয়ার) ২৪৪৫ ভোট, এ এম কাইয়ুম (রেডিও) ৭২৩ ভোট ও ইরোজ আহমেদ (ঘুড়ি) ১৪৩৮ ভোট পেয়েছেন। যেহেতু শেখ মোহাম্মদ আলমগীর ঝুড়ি প্রতীকে ৯টি কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ২৪৭২ ভোট পেয়েছেন, সেজন্য আমি সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত হিসাবে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে শেখ মোহাম্মদ আলমগীরকে বিজয়ী ঘোষণা করলাম।

আবদুল বাতেন জানান, আরমানিটোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরুষ ভোটকেন্দ্রের (কেন্দ্র-৫২০) ঘুড়ি প্রতীক ভোট পেয়েছিল ২০২ আর ঝুড়ি প্রতীক পেয়েছিল ৪৩৯ ভোট। ঝুড়ি আর ঘুড়ি প্রতীক দুটি শুনতে একই রকম হওয়ার কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। ফলে মাঝখানের টিফিন ক্যারিয়ারের প্রার্থী জিতে গিয়েছিল। পরে ঝুড়ি প্রতীকের প্রার্থী অভিযোগ দেওয়ার পর এটি যাচাই করা দেখা গেছে প্রার্থী ও প্রিজাইডিং অফিসারের ফলাফল ভিন্ন।

তিনি বলেন, পরে আমরা বাধ্য হয়ে ফল স্থগিত করেছি, আর বিধি ও আইন দেখেছি। প্রিজাইডিং অফিসার বলেছেন, তিনি লিখতে ভুল করেছেন, তিনি লিখিতও দিয়েছেন সেটি। ইভিএমের রেজাল্টই সত্য, আর প্রিজাইডিং অফিসার যেহেতু স্বীকার করেছে ভুল হয়েছে তাই আমরা ইভিএমের ফলাফলই গ্রহণ করেছি।

এ সময় জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ইভিএম নতুন পদ্ধতি, যার কারণে কিছু কনফিউশন থাকতে পারে। তবে এটি আগের সব পদ্ধতির চেয়ে নির্ভরযোগ্য। একটি কেন্দ্রে যে কয়টি বুথ থাকবে তার সব ইনিডিভিজুয়াল ফলাফল অপিট কার্ডে সংরক্ষিত থাকে। এছাড়াও কতজন ভোটারের ফিঙ্গারপ্রিন্ট মেলেনি তাদের তথ্যসহ কার্ডে সংরক্ষিত থাকে। কেন্দ্রে কতজন ভোটার আছে, আর কতজন ভোট দিয়েছে, কোন প্রতীকে কত ভোট পড়েছে সব তথ্যই সংরক্ষিত থাকে এই কার্ডে।

ভোটের ফল পাল্টে দেওয়ার অভিযোগ করার পর ২ ফেব্রুয়ারি গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচনের ফল স্থগিত করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। পুরান ঢাকার লালবাগ, বংশাল এলাকা নিয়ে গঠিত এই ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে গঠিত।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে