আগের রাতেই বাংলাদেশকে প্রথম বিশ্বকাপ এনে দিয়েছে অনূর্ধ্ব-১৯ দল। সেটাও আবার ভারতের মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে। রাত পোহাতেই পাকিস্তানের মাটিতে ইনিংস হারের লজ্জা পেল সিনিয়র জাতীয় দল। প্রথম ইনিংসের চেয়ে দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিং আরও খারাপ। আজ ম্যাচের চতুর্থ দিনে বাংলাদেশ তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে অল-আউট হয়েছে মাত্র ১৬৮ রানে। যে কারণে এক ইনিংস আর ৪৪ রানে রাওয়ালপিন্ডি টেস্ট জিতে নিয়েছে স্বাগতিক পাকিস্তান। দ্বিতীয় দফার সফরেও পাকিস্তান থেকে লজ্জা নিয়ে ফিরতে হচ্ছে মুমিনুল-তামিমদের।
গতকাল রোববার নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ১২৬ রান তুলে তৃতীয় দিন শেষ করেছিল বাংলাদেশ। ৪১তম ওভারে নাসিম শাহ হ্যাটট্রিক করে বাংলাদেশের পরাজয় ত্বরান্বিত করেন। তার শিকার হন নাজমুল হোসেন শান্ত (৩৮), তাইজুল ইসলাম (০) এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (০)। আজ সোমবার চতুর্থ দিনের শুরুতেই অধিনায়ক মুমিলুন হককে (৪১) লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেন শাহিন আফ্রিদি। এরপর শুধুই সময়ের অপেক্ষা। লিটন দাস (২৯) আর রুবেল হোসেন (২৬ বলে ৫) কিছুক্ষণ লড়াই করেন। লাঞ্চের আগে প্রথম সেশনেই ১৬৮ রানে অল-আউট হয় বাংলাদেশ। ৪টি করে উইকেট নিয়েছে হ্যাটট্রিকম্যান নাসিম শাহ এবং ইয়াসির শাহ।
বাংলাদেশের ২৩৩ রানের জবাবে প্রথম ইনিংসে ৪৪৫ রান তুলে অল-আউট হয় পাকিস্তান। তাদের লিড দাঁড়ায় ২১২ রানের। পাকিস্তানের হয়ে জোড়া সেঞ্চুরি হাঁকান শান মাসুদ (১০০) এবং বাবর আজম (১৪৩)। এছাড়া ১২৯ বলে ৬৫ রান করা আসাদ শফিককে লিটন দাসের গ্লাভসবন্দি করেন এবাদত হোসেন। সেঞ্চুরির কাছে গিয়ে ৭৫ রানে তাইজুলের বলে তামিম ইকবালের তালুবন্দি হয়ে ফিরেন হারিস সোহেল। বাংলাদেশের হয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন আবু জায়েদ রাহি এবং রুবেল হোসেন। ২ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম।
নিজেদের প্রথম বাংলাদেশ অল-আউট হয় মাত্র ২৩৩ রানে। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দলীয় ৩ রানেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান দুই ওপেনার তামিম ইকবাল (৩) আর অভিষিক্ত সাইফ হাসান (০)। অধিনায়ক মুমিনুল করেন ৩০ রান। টিকে থাকার লড়াই করতে করতে নাজমুল হোসেন শান্ত করেন ১১০ বলে ৪৪ রান। বাংলাদেশের ইনিংসের একমাত্র হাফ সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ মিঠুন। নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ১৪০ বলে ৬৩ রান। ৫৩ রানে ৪ উইকেট নেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। ২টি করে নিয়েছেন মোহাম্মদ আব্বাস আর হারিস সোহেল।
এর আগে গতকাল পচেস্ট্রুমে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ফাইনালে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৭.২ ওভারে ১৭৭ রানে অল-আউট হয়ে যায় ভারত। ফিল্ডিংয়ে নেমেই ভারতকে কাঁপিয়ে দেয় টাইগাররা। দলীয় ৯ রানে ডিএ সাক্সেনাকে মাহমুদুল হাসানের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত করেন অভিষেক দাস। রান তুলতে নাভিশ্বাস উঠে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের। এরপর জসশ্বী জয়সওয়াল আর তিলক ভার্মার ব্যাটে এগুতে থাকে ভারত। ২৩ ওভারে দুজনের জুটিতে আসে ৯৪ রান। অবশেষে ২৯তম ওভারে দলীয় ১০৩ রানে তানজিম সাকিবের বলে শরিফুলের তালুবন্দি হন তিলক (৩৮)। নতুন ব্যাটসম্যান পিকে গ্রেগ বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। রকিবুলের বলে আউট হন ৭ রান করে।
এর মাঝেই হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন ওপেনার জয়সওয়াল। সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও তাকে হতাশ হতে হয়। শরিফুল ইসলামের বলে তানজিদের তালুবন্দি হয়ে ফিরেন ১২১ বলে ৮৮ রান করা এই ব্যাটসম্যান। ১৫৬ রান পঞ্চম উইকেট হারায় ভারত। রান নিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝিতে রান-আউট হন উইকেটকিপার ধ্রুব জুরেল (২২)। ভারতের ৭ম উইকেটের পতন হয় রবি বিঞ্চুর বিদায়ে। শরিফুলের দুর্দান্ত এক থ্রোতে প্যাভিলিয়নে ফিরেন রবি (২)। ৩ রান করা অথর্ব আনকোলেকারকে বোল্ড করে দেন অভিষেক। উইকেটে এসে ৫ বল খেলে ‘ডাক’ মারেন কার্তিক ত্যাগী। সুশান্ত মিশ্রের (৩) বিদায়ে শক্তিশালী ভারত ৪৭.২ ওভারে ১৭৭ রানে অল-আউট হয়ে যায়।