এখনো মেলেনি চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৩ লাশের পরিচয়। এক বছর হতে যাওয়া এই আগুনের ঘটনায় ৬৭ জনের ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ। এই প্রতিবেদন যেকোনো সময় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
বুধবার ঢামেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
চিকিৎসক জানান, অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৬৭ জনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে শনাক্ত হয়েছিল ৪৫ জন। বাকি ২২ জনের ডিএনএ প্রোফাইলিং করা হয়, এর মাধ্যমে ১৯ জনকে শনাক্ত করা হয়। বাকি তিনজনকে এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
২০১৯ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর চকবাজারের ওয়াহেদ ম্যানশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুনে ৭০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়। আগুনের ঘটনায় সিলিন্ডারভর্তি পিকআপেও আগুন ধরে। আর সেখানে অসংখ্য সিলিন্ডার একসঙ্গে বিস্ফোরিত হওয়ার পর এর শক্তি এতটাই বেশি ছিল যে, গাড়িটি অন্তত তিনতলা বাড়ির সমান উঁচুতে উঠে মাটিতে আছড়ে পড়ে। এই সময় সিলিন্ডারের ভেতরের গ্যাস আর আগুন চারপাশে ছড়িয়ে যায় কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই। এই আগুন গিয়ে পড়ে খাবার হোটেলের সামনে রাখা গ্যাসের সিলিন্ডারে। প্রচণ্ড উত্তাপে বিস্ফোরিত হয় সেগুলোও।
- চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী যারা
- জিম্বাবুয়ে সিরিজের পর অধিনায়কত্ব হারাচ্ছেন মাশরাফি
এসব বিস্ফোরণে বিদ্যুতের তার পুড়ে যাওয়ায় বন্ধ করে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ সংযোগ। আর অন্ধকারের মধ্যে এই আগুন তৈরি করে বিভীষিকাময় পরিস্থিতি। তখন রাত সাড়ে ১০টা। চকবাজারের চুড়িহাট্টা মোড়ের দোকানগুলো বন্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ব্যবসায়ীরা। তবে চুড়িহাট্টা জামে মসজিদ সংলগ্ন আসগর আলী লেন, নবকুমার লেন ও হায়দার আলী লেনের সংযোগস্থল চুড়িহাট্টার মোড়ে রিকশা, প্রাইভেট কার, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল মিলে জট লেগেছিল। এর মধ্যে গ্যাসের বিস্ফোরণ দগ্ধ করে যানজটে আটকা পড়া বহুজনকে। পুড়ে অঙ্গার হয়ে যায় তারা।
এত বড় ভয়াবহ ঘটনার ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেরিতে দেয়া হচ্ছে কেন জানতে চাইলে সোহেল মাহমুদ বলেন, আমরা টিমওয়াইজ করে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করি। এর মধ্যে ডিএনএর স্যাম্পল (নমুনা) সংগ্রহ করে এগুলো সিআইডিতে পাঠানো হয়, ওইসব রিপোর্ট আসতে দেরি হওয়ায় এবং ময়নাতদন্তকারী টিমের কারও কারও বদলি হওয়ার কারণে রিপোর্ট প্রস্তুত হতে দেরি হয়েছে।
তিনি বলেন, গত সপ্তাহে আমরা ডিএনএ রিপোর্ট পেয়েছি, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রস্তুত হতে কিছুটা সময় লেগেছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, যারা এখনো তাদের স্বজনকে পাননি তারা ডিএনএ নমুনা দিয়ে যায়নি। নমুনা দিয়ে গেলে ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের মাধ্যমে শনাক্ত করা হবে।