মুমিনুল-মুশফিকের সেঞ্চুরিতে লিড বাড়াচ্ছে বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

মুমিনুল-মুশফিক
মুমিনুল-মুশফিক। ছবি : সংগৃহিত

৯৯ রানে পৌঁছে গিয়েছিলেন লাঞ্চেরও আগে। বিরতির আগে দুই বল পেয়েছিলেন, কিন্তু মুশফিকুর রহীম তাড়াহুড়ো করলেন না। ৪০ মিনিটের বিরতি কাটিয়ে ফেরার পরও সেঞ্চুরির জন্য তাড়া দেখালেন না বাংলাদেশের এই ব্যাটিং স্তম্ভ।

দেখেশুনে খেললেন আরও ৬টি বল। অবশেষে বাউন্ডারিতেই সেঞ্চুরি পূরণ মুশফিকের। সব মিলিয়ে এক রান নিতে অপেক্ষা করলেন ৮ বল। সময়ের হিসেবে যেটি আবার প্রায় এক ঘন্টা।

universel cardiac hospital

টেস্ট ক্রিকেটে ধৈর্যই সব, মুশফিক আরও একবার দেখিয়ে দিলেন। ধৈর্যর সর্বোচ্চ পরীক্ষা দিয়ে ১৬০ বলে তুলে নিলেন তার টেস্ট ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মুমিনুল-মুশফিকের ব্যাটে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৩৭৭ রান। মুমিনুল ১২৫ আর মুশফিক ১১৮ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে আছেন।

এই মাঠেই ১৪ মাস আগে হওয়া (২০১৯ সালের ১১-১৫ নভেম্বর) শেষ টেস্টে এই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অনবদ্য ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন মুশফিক। ৪২১ বলে খেলেছিলেন ২১৯ রানের মহাকাব্যিক ইনিংস। তার ১০ ইনিংস পর আবার শতরান মুশফিকের ব্যাটে।

মিরপুর টেস্টে জিম্বাবুয়েকে রীতিমত ভোগাচ্ছেন মুমিনুল হক আর মুশফিকুর রহীম। তাদের দুর্দান্ত এক জুটি কিছুতেই ভাঙতে পারছে না সফরকারিরা। চতুর্থ উইকেটে এখন পর্যন্ত তারা অবিচ্ছিন্ন আছেন ১৯৪ রানে।

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ নয়। তবু এই টেস্টটা বাংলাদেশের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। সর্বশেষ ৬ টেস্টের মধ্যে ৫টিতেই ইনিংস পরাজয় দেখা টাইগারদের যে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টটিই পারে হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে।

সেই আত্মবিশ্বাস ফেরানোর লড়াইয়ে বেশ ভালোই করছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়েকে প্রথম ইনিংসে ২৬৫ রানে গুটিয়ে দেয়ার পর ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরুরই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন দুই ওপেনার সাইফ ও তামিম। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই জোড়া বাউন্ডারি হাঁকান ডানহাতি সাইফ। পরের ওভারে তামিমের ব্যাট থেকেও আসে দুই চার। মাত্র ৩ ওভারেই ১৮ রান করে ফেলে বাংলাদেশ।

কিন্তু চতুর্থ ওভারের শেষ বলে হালকা বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে ব্যাট এগিয়ে দেয়ার ভুল করে বসেন সাইফ। ফলে তার ব্যাটের বাইরের কানা ছুঁয়ে বল জমা পড়ে উইকেটরক্ষক রেগিস চাকাভার হাতে। সমাপ্তি ঘটে সাইফের ১২ বলে ৮ রানের ইনিংসের।

মধ্যাহ্ন বিরতির আগে আর বিপদ ঘটতে দেননি নাজমুল হোসেন শান্ত এবং তামিম ইকবাল। দুজন মিলে ৪ ওভার খেলে যোগ করেন ৭ রান। পরে দ্বিতীয় সেশনেও দারুণ ব্যাট করেন এ দুজন। পাল্লা দিয়েই নিজেদের রান বাড়াচ্ছিলেন শান্ত ও তামিম। মনে হচ্ছিল, দুজনই তুলে নেবেন ফিফটি।

কিন্তু দলীয় ৯৬ রানের মাথায় অফস্টাম্পের বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বসেন তামিম। সমাপ্তি ঘটে তার ৮৯ বলে ৪১ রানের ইনিংসের, একইসঙ্গে ভাঙে শান্তর সঙ্গে ১৫৯ বলে ৭৮ রানের জুটি।

তামিম না পারলেও বিরতির এক ওভার আগে ফিফটি তুলে নেন শান্ত। ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি করতে খেলেন ১০৮টি বল, হাঁকান ৬টি বাউন্ডারি। পরে বিরতির ঠিক আগের ওভারে মারেন আরও একটি বাউন্ডারি।

তৃতীয় উইকেটে মুমিনুল হককে নিয়ে শান্ত গড়েন ৭৬ রানের জুটি। কিন্তু ৫০তম ওভারে এসে বোকার মতো আউট হয়ে বসেন শান্ত। অভিষিক্ত তিশুমার বেরিয়ে যাওয়া ডেলিভারিতে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। ১৩৯ বলে ৭ বাউন্ডারিতে গড়া শান্তর ৭১ রানের ইনিংসটি থামে তাতেই।

তবে এরপর মুমিনুল আর মুশফিকুর রহীম দলকে আর বিপদে পড়তে দেননি। দ্বিতীয় দিনের শেষ সেশনে ২১.২ ওভারের জুটিতে অবিচ্ছিন্ন থাকেন তারা। অবিচ্ছিন্ন আছেন তৃতীয় দিনেও।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে