চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে ৪৪১ জন ফরম সংগ্রহ করলেও জমা দিয়েছেন মাত্র ২২০ জন। সে হিসাবে নির্বাচনে মনোনয়ন সংগ্রহ করেও জমা দেননি অর্ধেকের বেশি কাউন্সিলর প্রার্থী।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস থেকে পাঠানো তথ্য বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর মেয়র পদে বিভিন্ন দলের ও স্বতন্ত্র ১১ জন ফরম সংগ্রহ করলেও জমা দিয়েছেন ৯ জন। এছাড়া সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ২২০ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী ৫৮ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে ফরম সংগ্রহ করেছিলেন ৪৪১ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে ফরম সংগ্রহ করেছিলেন ৭৯ জন।
মেয়র পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন- আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরী, বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন, জাতীয় পার্টির সোলায়মান আলম শেঠ, ইসলামী আন্দোল বাংলাদেশের জান্নাতুল ইসলাম, ইসলামী ফ্রন্টের এম এ মতিন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আবুল মঞ্জুর, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী ও মো. তানজিল আবেদিন।
ফরম সংগ্রহ করলেও জমা দেননি চট্টগ্রামের বিএনপি নেতা ও বিজিএমইএর সাবেক সহ-সভাপতি এরশাদ উল্লাহ এবং আওয়ামী লীগ নেতা ও নুরুল ইসলাম বিএসসির বড় ছেলে বিশিষ্ট শিল্পপতি মুজিবুর রহমান।
এদিকে নির্বাচন অফিসের তথ্য বিশ্নেষণ করে দেখা গেছে, ১নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ১৭ জন, ২নং জালালাবাদ ওয়ার্ড থেকে ১৩ জন, ৩নং পাচলাইশ ওয়ার্ড থেকে ১৬ জন, ৪নং চান্দগাঁও ওয়ার্ড থেকে ১৩ জন, ৫নং মোহরা ওয়ার্ড থেকে ২১ জন, ৬নং পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ড থেকে ৫ জন, ৭নং পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড থেকে ৯ জন, ৮নং শুলকবহর ওয়ার্ড থেকে ৯ জন, ৯নং উত্তর পাহাড়তলী ওয়ার্ড থেকে ১১ জন, ১০নং উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড থেকে ৬ জন, ১১নং দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ড থেকে ১৬ জন, ১২নং সরাইপাড়া ওয়ার্ড থেকে ৯ জন, ১৩নং পাহাড়তলী ওয়ার্ড থেকে ১৫ জন, ১৪নং লালখান বাজার ওয়ার্ড থেকে ১১ জন, ১৫নং বাগমনিরাম ওয়ার্ড থেকে ৯ জন, ১৬নং চকবাজার ওয়ার্ড থেকে ১২ জন, ১৭ নং পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ড থেকে ১১ জন, ১৮নং পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ড থেকে ৫ জন, ১৯নং দক্ষিণ বাকলিয়া ওয়ার্ড থেকে ১৩ জন, ২০নং দেওয়ান বাজার ওয়ার্ড থেকে ৮ জন এবং ২১নং জামালখান ওয়ার্ড থেকে ৮ জন।
এছাড়া ২২নং এনায়েত বাজার ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ৫ জন, ২৩ নং উত্তর পাঠানটুলি ওয়ার্ড থেকে ৮ জন, ২৪ নং উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ড থেকে ৮ জন, ২৫ নং রামপুর ওয়ার্ড থেকে ৬ জন, ২৬ নং উত্তর হালিশহর ওয়ার্ড থেকে ১৬ জন, ২৭ নং দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ড থেকে ৯ জন, ২৮ নং পাঠানটুলী ওয়ার্ড থেকে ১৪ জন, ২৯ নং পশ্চিম মাদারবাড়ি ওয়ার্ড থেকে ০৯ জন, ৩০ নং পূর্ব মাদারবাড়ি ওয়ার্ড থেকে ৭ জন, হাবিবুর রহমান, ৩১ নং আলকরন ওয়ার্ড থেকে ১০ জন, ৩২ নং আন্দরকিল্লা ওয়ার্ড থেকে ১১ জন, ৩৩ নং ফিরিঙ্গী বাজার ওয়ার্ড থেকে ৯ জন, ৩৪ নং পাথরঘাটা ওয়ার্ড থেকে ১৪ জন, ৩৫ নং বক্সিরহাট ওয়ার্ড থেকে ৯ জন, ৩৬ নং গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ড থেকে ৮ জন, ৩৭ নং উত্তর মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ড থেকে ১০ জন, ৩৮ নং দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ড থেকে ১৩ জন, ৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ড থেকে ১০ জন, ৪০ নং উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ড থেকে ১৪ জন ও ৪১ নং দক্ষিণ পতেঙ্গা ওয়ার্ড থেকে ১৪ জন প্রার্থী কাউন্সিলর পদে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন।
কিন্তু বৃহস্পতিবার শেষ দিন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন মাত্র ২২০ জন প্রার্থী। বাকি ২২১ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়ন সংগ্রহ করেও তা জমা দেননি।
এছাড়া সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে ফরম সংগ্রহ করেছিলেন ৭৯ জন। শেষ দিনে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন ৫৮ জন প্রার্থী। বাকি ২১ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী মনোনয়ন সংগ্রহ করেও তা জমা দেননি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিল চোখে পড়ার মতো। চসিক নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকার প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ১৯ জন। সিটি নির্বাচনের ইতিহাসে এবারই প্রথম আওয়ামী লীগ থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক মেয়র হওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। মূলত এদের অনেকে নৌকার ওপর ভর করে জয় পেতে চাইছিলেন। কাউন্সিলর প্রার্থিতার ক্ষেত্রেও সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল। কিন্তু বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রতি দলের কঠোর অবস্থানের কারণে শেষ পর্যন্ত অনেকে মনোনয়নপত্র জমা দেননি।