আইনের শাসন সূচকে চলতি বছর ১ দশমিক ৬ শতাংশ অবনতি হয়েছে বাংলাদেশের। এখন বিশ্বের ১২৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৫তম। আর দক্ষিণ এশিয়ার ছয় দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা দ্য ওয়ার্ল্ড জাস্টিস প্রজেক্টের (ডব্লিউজেপি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
বুধবার (মার্চ) ‘আইনের শাসন সূচক প্রতিবেদন-২০২০’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবছরই বিভিন্ন দেশে আইনের শাসন পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ডব্লিউজেপি। গত বছর ১২৬ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১১২।
আইনের শাসনের শাসন সূচকে ৮টি বিষয় বিবেচনায় আনা হয়েছে। এগুলো হল- সরকারের ক্ষমতা, দুর্নীতির অনুপস্থিতি, উন্মুক্ত সরকার, মৌলিক অধিকার, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা, ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা, নাগরিক ন্যায়বিচার এবং ফৌজদারি বিচার।
বাংলাদেশের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ মৌলিক অধিকারের দিক থেকে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ১২৮টি দেশের মধ্যে ১২২তম অবস্থানে রয়েছে। আর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে নিচে, অর্থাৎ ছয় দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে। নেপাল এ সূচকে অনেক দূর এগিয়ে ৭৬তম। বাংলাদেশের পরে রয়েছে তুরস্ক, ভেনিজুয়েলা, মোজাম্বিক, চীন, মিসর ও ইরান। তবে শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তার দিক থেকে বাংলাদেশের কিছুটা উন্নতি হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ১২৮ দেশের মধ্যে ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১০৭, দুর্নীতির অনুপস্থিতি সূচকে ১০২, উন্মুক্ত সরকারে ৯৩, নিয়ন্ত্রণমূলক ক্ষমতার প্রয়োগ ১১১, ফৌজদারি বিচারে ১০৪, দেওয়ানি বিচারে ১১৯, শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তায় ১০৩ নম্বর অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশে সবচেয়ে পিছিয়ে আছে মৌলিক অধিকার সূচকে। এই তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১২২। দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ নেপাল এই সূচকে অনেক দূর এগিয়ে-৭৬তম।
প্রতিবেদনে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে থাকা তিন দেশ হচ্ছে ডেনমার্ক, নরওয়ে ও ফিনল্যান্ড। আর একেবারে নিচের দিকে রয়েছে কঙ্গো, কম্বোডিয়া ও ভেনেজুয়েলা।
আইনের শাসনের দিক থেকে গত এক বছরে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে ইথিওপিয়ার। দেশটির এ ক্ষেত্রে ৫ দশমিক ৬ ধাপ অগ্রগতি হয়েছে। আর সবচেয়ে বেশি অবনতি হয়েছে মিসরে। দেশটির সূচকে ৮ দশমিক ৫ নম্বর কমেছে। অবনতি হওয়া অন্য দেশ হচ্ছে ক্যামেরুন। দেশটির এ ক্ষেত্রে সূচক নম্বর কমেছে ৪ দশমিক ৪ শতাংশ।
১২৮ দেশের ১ লাখ ৩০ হাজার খানায় জরিপ ও চার হাজার আইনজীবীর মতামত নিয়ে ডব্লিউজেপি এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে। বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনার এক হাজার ব্যক্তির ওপরে জরিপ চালানো হয়।