কোন মাস্ক কত দিন ব্যবহার করবেন

মায়িশা আতিয়া

মাস্ক
ফাইল ছবি

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস।  প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই বিশ্বব্যাপী চাহিদা বেড়েছে ফেস মাস্কের। করোনা ভাইরাস ঠেকাতে এশিয়ার পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হিড়িক পড়েছে ফেস মাস্ক কেনার। কোনো কোনো দেশে দেখা দিয়েছে মাস্ক সঙ্কট।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশির সংস্পর্শে এলে বা তার সঙ্গে হাত মেলালেও করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারে যে কেউ। তাই এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে প্রথমেই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

universel cardiac hospital

তবে ফেস মাস্ক করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে কতটা কার্যকরী তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। আবার কোন ধরনের মাস্ক কীভাবে ব্যবহার করতে হবে তা নিয়েও সন্দিহান অনেকে।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে অনেকেই ফেস-মাস্ক ব্যবহার করছেন। কিন্তু অনেকেই মাস্ক পরছেন ভুল পদ্ধতিতে। আবার অনেকে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে কত সময় পর্যন্ত তাও নিশ্চিত নন।

ডিসপোজেবল মাস্ক, যাকে সার্জিক্যাল ফেস মাস্কও বলা হয়। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের আশপাশে থাকা চিকিৎসক এবং হাসপাতালের নানান কর্মীরাও এটি ব্যবহার করেন। এটি চিকিৎসক এবং রোগী উভয়কেই সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। তবে এটি বাতাসের ছোট ছোট কণা আটকাতে পারে না। এই মাস্কগুলো মাত্র ৩ থেকে ৮ ঘণ্টার বেশি পরা উচিত নয়, এটি ভয়ঙ্কর করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারে না।

সার্জিক্যাল মাস্কের দুটি অংশ থাকে। একটি অংশ হালকা নীল রঙের বা অন্যান্য রং যেমন-গোলাপিও হতে পারে এবং আরেকটি অংশ সাদা রঙের। নীল অংশটি হচ্ছে ওয়াটারপ্রুফ আর সাদা অংশটি ফিল্টার, যা ভেদ করে জীবাণু ঢুকতে পারে না। আপনি যদি সুস্থ ব্যক্তি হয়ে থাকেন এবং বাইরের ধুলাবালি ও রোগ জীবাণুর আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে চান, তাহলে সাদা অংশটি বাইরে এবং নীল অংশটি ভিতরে দিকে দিয়ে পরিধান করুন। কেননা সাদা অংশ দিয়ে ফিল্টার করেই বাতাস ভেতরে ফুসফসে ঢুকবে। আর আপনি যদি ঠাণ্ডা, জ্বর, হাঁচি, কাশি বা অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত থাকেন, তখন নীল অংশটি বাইরে রেখে সাদা অংশটি ভেতরে ব্যবহার করবেন। এতে আপনার মুখ থেকে ক্ষতিকর কিছু বাইরে যেতে বাঁধা পাবে এবং অন্য কেউ সহজে আক্রান্ত হবে না।

সার্জিক্যাল মাস্ক কতবার ব্যবহার যোগ্য

বেশির ভাগ মানুষই সাদা অংশটি মুখের ভেতরে রাখে এবং একই মাস্ক দিনের পর দিন ব্যবহার করতে থাকে। সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো, তবে তা ওয়ানটাইম ব্যবহার করতে হয়। বাজারে এক লেয়ারের মাস্কও পাওয়া যায়, যা ধুলা-ময়লা থেকে আমাদের বাঁচাতে পারলেও রোগ প্রতিরোধে কোন কাজই করে না। কাজেই সেগুলো ব্যবহার করা ঠিক নয়।

একটি মাস্ক কত সময় ব্যবহার করা যাবে

মনে রাখবেন, একটি মাস্ক একবারের বেশি ব্যবহার করবেন না। নিয়ম অনুযায়ী একটি মাস্ক ২ ঘণ্টার চেয়ে বেশি পড়ে রাখা যায় না। কোন কোন ভাল মানের মাস্ক একটানা ৮ ঘন্টার বেশি পড়া ঠিক না। কিন্তু আমাদের পক্ষে তো আর বার বার এই মাস্ক পরিবর্তন করা সম্ভব না। কাজেই সর্বোচ্চ এক দিন ব্যবহার করবেন এবং ব্যবহার শেষে যেখানে সেখানে না ফেলে রোগ জীবাণু যেন না ছড়ায় সেভাবে কাগজের প্যাকেটে মুড়ে ডাস্টবিনে ফেলে দিন।

চীনের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিকার সেন্টারের প্রধান ফেং জিজিয়ান বলেন, গণপরিবহন কিংবা জনাকীর্ণ স্থানে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। মূলত মানুষের স্পর্শেই এটি বেশি ছড়িয়ে থাকে। তাই গাড়ি চালানোর সময় কিংবা জনশূন্য এলাকায় মাস্ক ব্যবহার না করলেও সমস্যা নেই। মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি করোনা ভাইরাস ঠেকাতে বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে