সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়টি নিয়ে ভাবছে: ওবায়দুল কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ওবায়দুল কাদের
ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের যে দাবি উঠেছে সরকার সে বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

রোববার ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে মুজিববর্ষ উদাযাপনকে ঘিরে সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক শেষ তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, বিষয়টি আমাদের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনায়ও আছে। আমাদের ভাবনায়ও আছে। আমরা বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। সময় মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবো।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস আতঙ্ক, উদ্বেগ উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের মানুষের ভেতরেও উদ্বেগ উৎকণ্ঠা রয়েছে। মহামারিতে রূপ নিয়েছে। এটা নিয়ে আমাদের উদ্বেগ উৎকণ্ঠা আছে। আমাদের জনগণের মধ্যে এ নিয়ে দুশ্চিন্তা আছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৪৯ টি দেশ আক্রান্ত হয়েছে। নতুন নতুন দেশ আক্রান্ত হচ্ছে।

করোনাভাইরাস মোকাবেলার বিষয়ে তিনি বলেন, কেবল মাত্র চীনকেই দেখছি নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা কিভাবে কন্ট্রোল করতে পারছেন সে বিষয় শেয়ার করার জন্য আমাদের কাছে তাদের একটা চিঠি আসছে। তারা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত আছে। এধরণের সংক্রামণ এবং বিস্তার রোধ করার জন্য সার্বিক সহযোগিতা সহানুভূতির হাত প্রসারিত করে চীন চিঠি দিয়েছে।

করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় আওয়ামী লীগের প্রস্তুতির বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত আমরা প্রস্তুত। প্রথম থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকার যেমন প্রস্তুত আমাদের দলকে প্রস্তুত করা হয়েছে। দেশবাসীকে সর্তক করতে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। আমরা প্রস্তুত। আমাদের এখানে এখন পর্যন্ত সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা নেই। যারা সয়ক্রমিত তারা বিদেশ থেকে এসেছেন। আগে যারা আসছে তাদের কোয়ারেন্টাইনে রেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

যে সকল দেশে আক্রান্ত হয়েছে সেসব দেশ থেকে প্রবাসীদের আসা বন্ধের কোনো পরিকল্পনা আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে এদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। গতকাল থেকে কঠোরভাবে বিষয়টি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে এবং যাতে বিদেশ থেকে বিমানের মাধ্যমে আগমন নিয়ন্ত্রণ বা বন্ধ করা যায় তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

করোনা ভাইরাসের প্রভাবে আওয়ামী লীগের নগর কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় ঘরোয়া কাজগুলো আরও গতি পাবে। ঘরোয়া কাজ করার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হবে।

পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন কবে হবে এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, পদ্মাসেতুর কাজে থাকা চাইনিজ কিছু কর্মী ছুটিতে গেছে। কিন্তু তার সংখ্যা খুব বেশি না। আমাদের এখানে ১ হাজার মতো চাইনিজ কর্মী কাজ করেন প্রকৌশলী এবং টেকনেশিয়ানসহ তার মধ্যে ছুটিতে গেছে ২৫০ জনের মতো। এদের মধ্যে কিছু চলে এসেছে। বাকিরা এই সময়ের মধ্যে না এলে কিংবা যদি তাদের আসা প্রলবিম্বত হয় তাহলে কিছু দেরি হলেও হতে পারে। তবে তাদের ছাড়া ৪ টি স্প্যান বসানো হয়েছে। আমাদের ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ২৬টি স্প্যান বসে গেছে। আগামী দুই মাস পর্যন্ত যদি এই অবস্থা অব্যহত থাকে তাতেও কোনো অসুবিধার সম্মুখিন হবে না। কাজ যথারিত এগিয়ে যাবে। এই জুলাই মাসের ৪১টি স্প্যান বসে যাবে। এরপর অন্যান্য কাজ চলবে ২০২১ সালের জুন মাস আমরা টার্গেট দিয়েছি সেভাবেই কাজ চলছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হোসেন, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, প্রচার সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দফতর সম্পাদক সায়েম খান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে