করোনাভাইরাস বিস্তার রোধে এবার বাংলাদেশে অবস্থানরত ভারতীয়দের দেশে ফেরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারতীয় ইমিগ্রেশন। ভারতের কোনো পাসপোর্টধারী যাত্রী পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত গ্রহণ করা হবে না মর্মে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনের দেয়া চিঠির প্রেক্ষিতে বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ ভারতীয়দের দেশে ফিরতে বাধা দেয়। ফলে বাংলাদেশে অধ্যায়নরত দেড় শতাধিক মেডিকেল শিক্ষার্থীসহ আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি বেড়াতে আসা ভারতীয় নাগরিকরা বেনাপোল চেকপোস্টে আটকা পড়েছেন।
এসব শিক্ষার্থী গাজীপুর ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও ঢাকা কমিউনিটি বেস্ট মেডিকেলে পড়াশশোনা করেন। এদের বাড়ি ভারতের কাশ্মীর প্রদেশে। তারা কবে কীভাবে ফিরবেন তা নিয়ে উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার মধ্যে পড়েছেন।
মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় বেনাপোল আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের সামনে বসে আছেন। তবে এসব যাত্রীকে বেনাপোল ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা করতে কোনো বাধা নেই। ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাদের গ্রহণ করতে রাজি নয় বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে বেনাপোল ইমিগ্রেশনকে। আবার সে দেশে আটকা পড়া বাংলাদেশিদের তারা ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে। এসব বাংলাদেশি যাত্রী বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ গ্রহণ করছে।
ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসা, ব্যবসা, ভ্রমণ ও বিশেষ করে মেডিকেলসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় শিক্ষার্থী বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রয়েছেন। তাদের অনেকে ফিরতে পারেননি। এছাড়া সাধারণ ভারতীয়রা অনেকে আটকা পড়েছেন।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান কবির বলেন, ভারত লকডাউন করায় এবং তাদের কাছে সকল দেশ থেকে যাত্রী প্রবেশে সরকারের উচ্চপর্যায়ের বিধি-নিষেধ আরোপ সংক্রান্ত চিঠি ইস্যু করেছে। তারা তাদের নিজ দেশের যাত্রীদেরও নিতে অপরাগতা প্রকাশ করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি ভারতীয় ইমিগ্রেশন পুলিশ সোমবার (২৩ মার্চ) বিকেলে আমাদের জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমাদের ওপর থেকে কোনো নির্দেশনা আসেনি যে কোনো যাত্রী প্রবেশ করানো যাবে না। যার কারণে বিদেশী যাত্রী বাদেও শুধু আটকে পড়া বাংলাদেশি যাত্রীদের প্রবেশ করাচ্ছি। এর মধ্যে অধিকাংশ ভারতে চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন। তারা ফেরত আসছেন।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে এর আগে গত ১৩ মার্চ বিকেল ৫টা থেকে বেনাপোল ইমিগ্রেশন দিয়ে বাংলাদেশিদের ভারতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। পরে ১৫ মার্চ দুই দেশের মধ্যে বাস, বিমান ও রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। আর ২৩ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত বেনাপোল-পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ করে দেয়া হয়। ২৪ মার্চ থেকে ভারতীয় নাগরিকদের ভারতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারতীয় ইমিগ্রেশন।