করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার সকাল থেকে দেশের প্রতিটি বিভাগ-জেলায় স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তা করছে সেনাবাহিনী।
আর সারাদেশে সেনা মোতায়েন করা হবে বুধবার থেকে। এমন তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এবং ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বিবেচনায় সরকার দেশের সব জেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে নির্দেশনা মোতাবেক এইড টু সিভিল পাওয়ারের আওতায় মঙ্গলবার দেশের সব বিভাগ এবং জেলায় করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসনকে সহায়তায় প্রয়োজনীয় সমন্বয় করছে সেনাবাহিনী।
আইএসপিআরের সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আগামীকাল বুধবার থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনাবাহিনী সারাদেশে মোতায়েন করা হবে। তারা স্থানীয় প্রশাসনকে নিয়ে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করবেন।
এসময়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের তালিকা প্রস্তুত এবং বিদেশফেরতদের কোয়ারেন্টিনে থাকা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনের পদক্ষেপে সহায়তা ও সমন্বয় করবেন সেনা সদস্যরা। এছাড়া বিভাগ এবং জেলা পর্যায়ে প্রয়োজনে মেডিকেল সহায়তা দেবে সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনী সামাজিক দূরত্ব ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, সন্দেহজনক ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা পর্যালোচনায় বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দেবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে তারা জেলা ও বিভাগীয় করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা, সন্দেহজনক ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা পর্যালোচনা করবে।
সেনাবাহিনী বিশেষ করে বিদেশ ফেরত ব্যক্তিদের কেউ নির্ধারিত কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক সময় পালনে ত্রুটি বা অবহেলা করছে কিনা, তা পর্যালোচনা করবে।
বাংলাদেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ৮ মার্চ। এরপর দিন দিন এ ভাইরাসে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। সর্বশেষ হিসাবে দেশে এখন পর্যন্ত ৩৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন, মারা গেছেন তিনজন। সেলফ ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন প্রায় ১৮ হাজার মানুষ। তাদের অধিকাংশই বিদেশ ফেরত।
করোনার বিস্তার রোধে এরই মধ্যে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে সভা-সমাবেশ ও গণজমায়েতের ওপর। চারটি দেশ ও অঞ্চল ছাড়া সব দেশ থেকেই যাত্রী আসা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে দেশের সব বিপণিবিতান। এছাড়া মুলতবি করা হয়েছে জামিন ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি ছাড়া নিম্ন আদালতের বিচারিক কাজ।