করোনা ভাইরাসের কারণে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে একাদশ জাতীয় সংসদের সপ্তম অধিবেশন আহ্বান করার বিষয়ে ১২ এপ্রিলের পরে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এ বিষয়ে সংসদ সচিবালয় এখনো কেনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বলে জানান তিনি।
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদের সপ্তম অধিবেশন আগামী ১৮ এপ্রিলের মধ্যে আহ্বান করার যে বাধ্যবাধকতা রয়েছে ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে।
এবিষয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, সংসদের পরবর্তী অধিবেশনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারী ছুটি রয়েছে। সেকারণে সংসদ আহ্বানের বিষয়ে ১২ এপ্রিলের পর সিদ্ধান্ত হবে। তিনি বলেন, ৬০ দিনের মধ্যে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বসার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সংসদের অধিবেশন আহবান করেন রাষ্ট্রপতি। এই বাধ্যবাধকতা এড়িয়ে যাওয়ার মতো কোনো নির্দেশনা সংবিধানে নেই। রাষ্ট্রপতি সংবিধানের বাইরে যাবেন কী করে? এপ্রিল মাসে সংসদের পরবর্তী অধিবেশন কবে বসবে এ নিয়ে আমরা ভাবছি। করোনাভাইরাসের কারণে সাধারণ ছুটির মেয়াদ ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। পরবর্তী ১০ ও ১১ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটিও এর সঙ্গে যুক্ত থাকবে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ বিষয়ে ১২ এপ্রিলের পর সিদ্ধান্ত নিতে পারবো বলে আশা করি। অপেক্ষা করুন, আমাদের হাতে এখনো সময় আছে।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংসদের বৈঠক করা নিয়ে যে আলোচনা চলছে সেবিষয়ে স্পিকার বলেন, সব এমপিদের সংসদের বৈঠকে যোগদানের অধিকার রয়েছে। কিন্তু ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেটা সম্ভব নয়। সবার সে সুবিধা নেই।
দ্বৈব-দুর্বিপাকে বা এ্যাক্ট অব গড-এ অধিবেশন পেছানোর সুযোগ আছে কীনা জানতে চাইলে ড. শিরীন শারমিন বলেন, সেটা নির্বাচনের বিষয়ে বলা হয়েছে। অধিবেশনের বিষয়ে সংবিধানে ক্যাটাগরিক্যালি বলা হয়েছে, সংসদের এক অধিবেশনের সমাপ্তি ও পরবর্তী অধিবেশনের প্রথম বৈঠকের মধ্যে ৬০ দিনের অতিরিক্ত বিরতি থাকবে না। তবে রাষ্ট্রপতি এ দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর লিখিত পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করবেন। সুতরাং সরকারি ছুটি শেষে সংসদ অধিবেশন বসা নিয়ে নিশ্চয় একটা সিদ্ধান্ত হবে।
উল্লেখ্য, সংবিধান অনুযায়ী একটি অধিবেশনের শেষ থেকে পরবর্তি অধিবেশন বসার সময়সীমা কোন ভাবেই ৬০ দিন উর্দ্ধে হতে পারবে না। চলতি সংসদের ষষ্ঠ অধিবেশন শেষ হয়েছিল গত ১৮ ফেব্রুয়ারি। সে হিসেবে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা মেনে ১৮ এপ্রিলের মধ্যে অধিবেশন বসতে হবে।
এর আগে করোনাভাইরাসে উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে মুজিববর্ষ উপলক্ষে ২২ ও ২৩ মার্চ আহুত সংসদের বিশেষ অধিবেশন স্থগিত করা হয়। রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ তার সাংবিধানিক ক্ষমতা বলে ২১ মার্চ তা স্থগিত করেন। তবে দেশের করোনা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলে সাংবিধানিক এ নির্দেশনা পালনে জটিলতা দেখা দিতে পারে বলে আশাঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।