যে কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অর্থায়ন বন্ধ করলেন ট্রাম্প

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি

করোনা মহামারি প্রতিরোধে বিশ্বজুড়ে জোর তৎপরতা চলছে। এরই মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় (ডব্লিউএইচও) অর্থায়ন বন্ধের ঘোষণা দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি ডব্লিউএইচওর বিরুদ্ধে চীনের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করা এবং সত্য ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ তুলেছেন। এককভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তহবিলে সবচেয়ে বড় অঙ্কের অর্থায়ন করে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর এ তহবিলে যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছে ৪০ কোটি ডলার; যা ছিল সংস্থাটির বার্ষিক বাজেটের প্রায় ১৫ শতাংশ। এছাড়া করোনা মোকাবেলায় সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অতিরিক্ত ১০০ কোটি ডলার চেয়েছিল।

ট্রাম্প ও তার সমর্থকদের অভিযোগ, মানুষে মানুষে সংক্রমিত হওয়া এ রোগের বিষয়ে সতর্ক করতে বিলম্ব করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাদের পক্ষ থেকে যেখান থেকে ভাইরাসের উৎপত্তি সেখানে বিশেষজ্ঞ পাঠানো হয়নি এবং নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। তাদের আরও অভিযোগ, ডব্লিউএইচও ত্বরিত সিদ্ধান্ত না নিয়ে চীনের সঙ্গে আমাদের সীমানা বন্ধ করার আগের দিনই জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা ঘোষণা করেছিল। গত সপ্তাহে ট্রাম্প ডব্লিউএইচওকে চীনঘেঁষা তকমা দিয়েছিলেন।

কীভাবে করোনা মোকাবেলা করছে ডব্লিউএইচও?

জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা একমত যে, করোনা মোকাবেলায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিক্রিয়া ভালোই ছিল। ২০১৪ সালের ইবোলা প্রতিরোধের সময় তৎকালীন মহাসচিব মার্গারেট চ্যানের তুলনায় বর্তমান মহাসচিবের কর্মকাণ্ড ভালো ছিল। এমনকি যুক্তরাষ্ট্র কোভিড-১৯ মোকাবেলায় যা করেছে তার তুলনায় ভালো করেছে ডব্লিউএইচও। গত ৫ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্কতা জারি করে। ৭ জানুয়ারি থেকে নিয়মিত টেলিকনফারেন্সে জনস্বাস্থ্য কর্মীদের ব্রিফিং দিতে শুরু করে। ৯ জানুয়ারি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সদস্য দেশগুলোকে নিজস্ব ঝুঁকি নির্ণয় ও পরিকল্পনার নির্দেশনা দেয়।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ কর্তন কি প্রভাব ফেলবে?

ডব্লিউএইচওকে ৬০-৯০ দিনের জন্য তহবিল কর্তন খুবই সীমিত হলেও এর প্রভাব পড়বে অন্য ক্ষেত্রে। এটি সংক্রামক রোগের ভ্যাকসিন প্রয়োগ ও ইবোলার মতো প্রাণঘাতী ভাইরাস মোকাবেলায় আগাম হুশিয়ারি দেয়ায় প্রভাব পড়তে পারে । এছাড়া বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ক‚টনীতিতেও এর প্রভাব পড়তে পারে। কারণ অন্য পরাশক্তি চীনের বাকস্বাধীনতা, স্বচ্ছতা ও মানবাধিকারের রেকর্ড খুব ভালো নয়। অন্যদিকে ট্রাম্পের তহবিল বন্ধের ঘোষণার প্রভাব অন্য দেশগুলো থেকে মিটিয়ে নেয়া সম্ভব হতে পারে। অনেক দেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতি এখনও অগাধ আস্থা রেখেছে। যুক্তরাজ্য যেমন ২০ কোটি পাউন্ড নতুন তহবিলের ঘোষণা দিয়েছে, যার মধ্যে সাড়ে ছয় কোটি পাউন্ড ডব্লিউএইচওর কাছে যাবে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে