বিশ্বব্যাপী মহামারি রূপ নেয়া করোনা ভাইরাসের রুখত অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির টিকা বানরের ওপর পরীক্ষায় সফল হয়েছে। এরই মধ্যে ছয় হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষা চলছে এটির। এরই মধ্যে এই টিকা তৈরির ভারতীয় অংশীদার ও বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউট মে মাস থেকেই উৎপাদনে যাওয়ার কথা জানিয়েছে।
আগামী সেপ্টেম্বর অক্টোবরে টিকা যাতে সরবরাহ করা যায় এজন্য শুরুতে ৪-৫ মিলিয়ন ডোজ তৈরি করবে সিরাম ইনস্টিটিউট। পরীক্ষায় সাফল্যের ভিত্তিতে এটি ১০ মিলিয়ন ডোজ পর্যন্ত বাড়াবে তারা।
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ভারতের পুনে শহরের দু’টি কারখানায় আগামী মাসেই টিকা তৈরির কাজ শুরু হবে। আগামী বছরের মধ্যে ৪০ কোটি ডোজ টিকা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। এ খবর দিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম লাইভ মিন্ট।
নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার অক্সফোর্ডের টিকা প্রাণীর ওপর সফল হয়েছে বলে জানান বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাষ্ট্রের হ্যামিল্টনের রকি মাউন্টেন ল্যাবরেটরিজের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ছয়টি রিসাস বানরকে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ভ্যাকসিন এবং ব্যাপক মাত্রায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রয়োগ করা হয়েছিল। বানরগুলো ২৮ দিন পর সুস্থ হয়ে উঠেছে।
অক্সফোর্ডের জেনার ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক অ্যাড্রিয়ান হিলের নেতৃত্বে একটি দলও ২৩শে এপ্রিল ভ্যাকসিন মানুষের ওপর পরীক্ষা শুরু করেছে। কারণ প্রাণীর ওপর ভ্যাকসিন পরীক্ষার সফলতা মানুষের ওপরও যে সফল হবে সেই গ্যারান্টি দেয় না।
বানরের ওপর সফল প্রয়োগের খবর পাওয়ার পরপরই সিরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আদর পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, তারা টিকা উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা ছিল বলেই তাদের সঙ্গে এ কাজে যুক্ত হয়েছি। আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঝুঁকি তো নিতেই হয়। যেহেতু বানরের ওপর টিকাটি কাজ করেছে, সেহেতু মানষের ওপরও তা কাজ করবে বলে আশাবাদী তিনি।
আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের তৈরি টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফল পাওয়া যাবে। আর তা সফল হবে বলে মনে করেন পুনাওয়ালা। করোনা ভাইরাসের টিকা নিয়ে গবেষণা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার এমন আরও দু’টি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও চুক্তি করেছে ভারতের এই টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। ৬০০ কোটি রুপি বিনিয়োগ করে টিকা তৈরির নতুন একটি কারখানাও বানাচ্ছে তারা।