বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি হিসাবের চেয়েও ৬০ গুণ বেশি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের (এফটি) এক বিশ্লেষণে এ তথ্য দেয়া হয়েছে।
সেখানে বলা হয়, বিশ্বের ১৪টি দেশে করোনায় মৃত্যুহারের সংখ্যা আনুষ্ঠানিক হিসাবের চেয়ে ৬০ গুণ বেশি। করোনায় ওই দেশগুলোতে মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি হিসাবে ৭৭ হাজার দেখানো হয়েছে।
অথচ সমীক্ষায় দেখা গেছে, এ সংখ্যা আসলে ১ লাখ ২২ হাজার। যদি এই হার সব দেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় তবে বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ২ লাখ ১০ হাজার নয়, ৩ লাখ ১৮ হাজার।
এ সমীক্ষায় ফিন্যান্সিয়াল টাইমস ২০২০ সালের মার্চ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত এই দেশগুলোর মৃত্যুর সংখ্যার সঙ্গে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত একই সময়ের মৃত্যুহার পর্যালোচনা করে।
এফটি জানিয়েছে, ১ লাখ ২২ হাজার মৃত্যু ওই স্থানগুলোর পূর্বের সময়ের স্বাভাবিক মৃত্যুহারের চাইতে ৫০ শতাংশ বেশি। এফটি অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, ইংল্যান্ড ও ওয়েলস, ফ্রান্স, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, পর্তুগাল, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও অন্য ১৩টি স্থানের মৃত্যুহার পর্যালোচনা করে।
বিশ্লেষণে বলা হয়, পূর্ববর্তী বছরের চাইতে গত মার্চ থেকে এপ্রিলে বেলজিয়ামে মৃত্যুহার ৬০ শতাংশ, স্পেনে ৫১ শতাংশ, নেদারল্যান্ডসে ৪২ শতাংশ ও ফ্রান্সে ৩৪ শতাংশ বেশি।
ইকুয়েডরের গায়ানা প্রদেশে ১ মার্চ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত কোভিড-১৯জনিত মৃত্যু আনুষ্ঠানিক হিসাবে বলা হয়েছে ২৪৫ জন। কিন্তু তথ্য বলছে, এ সময়ে দেশটিতে গত বছরের চাইতে ১০ হাজার ২০০ জন বেশি মানুষ মারা গেছেন, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩৫০ শতাংশ বেশি।
করোনার এপিসেন্টার চীনের উহানে মৃত্যুহার ৫০ শতাংশ বেশি। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ডেভিড স্পিগেহায়টা বলেন, ‘ব্রিটেনে করোনায় মৃত্যুহার বাস্তবের চাইতে অনেক কম। কারণ এখানে শুধু হাসপাতালে হওয়া মৃত্যুই গণনা করা হচ্ছে।’ ইন্দোনেশিয়ায় সরকারি হিসাবের বাইরে আরও ২ হাজার ২০০ জনের বেশি লোক করোনায় মারা গেছে। মৃত্যুর তালিকায় তাদের নাম নিবন্ধিত হয়নি। ১৬টি প্রদেশ থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এ সংখ্যা পাওয়া গেছে। তিন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ বলেছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে ৭৬৫ জনের মৃত্যুর খবর জানা গেলেও তা আসলে কল্পনার চেয়েও বেশি।