করোনা: ই-কমার্স খাতে মাসে ক্ষতি ৬৬৬ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ই-কমার্স
ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে প্রায় দেড় মাস ধরে দেশে অঘোষিত লকডাউন থাকায় ই-কমার্স খাতের প্রায় ৯০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারছে না। ফলে করোনার প্রভাবে এ খাতে প্রতিমাসে ক্ষতির পরিমাণ ৬৬৬ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)।

করোনাভাইরাস সংক্রমণজনিত সাধারণ ছুটিকালীন জনসাধারণকে সহযোগিতা করতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ই-ক্যাবের ই-কমার্স সংক্রান্ত গৃহীত পদক্ষেপ এবং সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইনে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।

universel cardiac hospital

আজ বুধবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ই-ক্যাব এ যৌথ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

ই-ক্যাবের অর্থ সম্পাদক আব্দুল হক অনু করোনাভাইরাসের প্রভাবে ই-কমার্স খাতের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

এতে বলা হয়, বর্তমানে ই-ক্যাবের মেম্বর সংখ্যা হচ্ছে এক হাজার ২০০ জন। বর্তমানে বাংলাদেশে ই-কমার্সের বাজার আট হাজার কোটি টাকা। এ সেক্টরে কাজ করছে এক লাখ ২৫ হাজার কর্মী। এর মধ্যে ২৬ শতাংশ হচ্ছে নারী এবং ৭৪ শতাংশ হচ্ছে পুরুষ।

অনু বলেন, বাংলাদেশের জিডিপিতে ই-কমার্সের অবদান দশমিক দুই শতাংশ। বর্তমানে দেশে প্রতিদিন ৮০ হাজার পরিবার ই-কমার্সের থেকে সেবা নিয়ে থাকেন। করোনাভাইরাসের কারণে মোট ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। এসব প্রতিষ্ঠান বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নিত্যপণ্য এবং ওষুধ সরবরাহ করেছে। করোনার কারণে স্বাভাবিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে না পারায় ই-কমার্স খাতে প্রতিমাসে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৬৬৬ কোটি টাকা।

অনুষ্ঠানে ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার বলেন, আমাদের ই-কমার্স খাতে পাঁচ লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। তবে করোনাকালে প্রায় ৯০ শতাংশ ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারেনি। যারা সীমিত আকারে কাজ করেছে তারাও সে অর্থে ব্যবসা করেনি, যেটুকু পেরেছে মানবসেবা করেছে।

শমী কায়সার বলেন, এখন ই-কমার্স খাতে আলাদা খাত ঘোষণা করার সময় এসেছে। কারন আমরা ব্যাংক ঋণ নিতে গেলে সমস্যায় পড়তে হবে। আমরা সবাই কিন্তু মিডিয়াম-স্মল এন্টারপ্রিনিয়ার তাই আমাদের জন্য করপোরেট ট্যাক্স মওকুফ করা অত্যন্ত জরুরি। আমরা যদি প্রণোদনা নাও পায় তারপরও আমরা আগামী কয়েক বছরের জন্য করপোরেট ট্যাক্স মওকুফ চাই। করোনার সময়ে আমরা ২ শতাংশ সুদে ১ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ব্যাংক ঋণ চাই।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব রোধে মানুষকে ঘরে রাখার কোনো বিকল্প নেই। মানুষকে ঘরে রাখা সম্ভব হয়েছে ই-কমার্সের মাধ্যমে পণ্য পৌঁছে দিয়ে। এ জন্য ই-কমার্সের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাই। তবে ই-কমার্স কার্যক্রম চালাতে বেশ কিছু সমস্যার কথা শুনলাম। এসব সমস্যা সমাধানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সব ধরনের সহযোগিতা করবে। আগেও আমরা ই-কমার্সকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছি, আগামীতে সেটা অব্যাহত থাকবে।

ই-কমার্স সংশ্লিষ্টদের সততার সাথে ব্যবসা পরিচালনার করারও আহ্বান জানান বাণিজ্যমন্ত্রী। এর মাধ্যমে কোনো মানুষ যেন প্রতারণার শিকার না হয় ষে বিষয়ে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ই-ক্যাব উপদেষ্টা ও সাংসদ নাহিম রাজ্জাক, বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন, এফবিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম প্রমুখ।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে