সারাদেশের অধস্তন (নিম্ন ) আদালতে ১৫০টি আবেদনের ভার্চুয়াল শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার ১৪৪ আসামির জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেয়া হয়েছে।
সারাদেশে ভার্চুয়াল শুনানির দ্বিতীয় দিনের এই তথ্য মঙ্গলবার রাতে জানান সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও স্পেশাল অফিসার ব্যারিস্টার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।
গত ১০ মে নিম্ন আদালতের ভার্চুয়াল কোর্টে শুধু জামিন শুনানি করতে নির্দেশ দেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। এ বিষয়ে ওইদিন একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো.আলী আকবর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় এবং এর ব্যাপক বিস্তার রোধকল্পে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আগামী ১৬ মে পর্যন্ত সব আদালতে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ছুটির সময়ে বাংলাদেশের প্রত্যেক জেলার জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর এলাকার মহানগর দায়রা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, বিশেষ জজ আদালতের বিচারক, সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক, জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারককে এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিজে অথবা তার নিয়ন্ত্রণাধীন এক বা একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা ‘আদালত কর্তৃক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০ এবং উচ্চ আদালতের জারিকৃত বিশেষ প্র্যাকটিস নির্দেশনা’ অনুসরণ করে শুধু জামিন সংক্রান্ত বিষয়গুলো তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার উদ্দেশ্যে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্দেশ দেয়া হলো।’
এরপর সোমবার (১১মে) থেকে জামিন শুনানি শুরু হয়। সেদিন প্রথম বারের মতো কুমিল্লা জেলা ও দায়রা জজ এক আসামিকে জামিন দেন।
তবে ঢাকায় ভার্চুয়াল আদালতে মঙ্গলবার প্রথম হাজতি আসামিদের জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে সোমবার (১১ মে) থেকে মামলার জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। প্রযুক্তিগত কারণে সোমবার ঢাকায় শুনানি হয়নি। তবে মঙ্গলবার প্রথম দিনে ঢাকার পাঁচটি ভার্চুয়াল আদালতে ৩৮ জন আসামির জামিন আবেদন মঞ্জুর করা হয়। জামিন দেয়া অধিকাংশ মামলা মাদক ও চুরির অভিযোগে করা। আসামিরা দীর্ঘদিন হাজতে থাকায় তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত।
মঙ্গলবার নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (সিজেএম) মোট আবেদন ২০ জমা পড়ে। এর মধ্যে ১০টির শুনানিতে ৪ জনের জামিন মঞ্জুর করা হয়।
কুমিল্লার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ৭টি মামলার মধ্যে ২টির শুনানি হয়। একটিতে একজনের মঞ্জুর করে অপরটি খারিজ করা হয়। ফেনীর সিজেএম আদালতে ২২টি আবেদনের মধ্যে ৩টির শুনানি শেষে ৬ জনকে জামিন দেয়া হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সিজেএম আদালতে মোট আবেদন জমা পড়ে ২০০টি। এর মধ্যে ২টি মামলার শুনানি শেষে ২ জন জামিন পেয়েছেন।
দিনাজপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালত ৮টি মামলায় শুনানি নিয়ে ৬টি মঞ্জুর করে ৬ জনকে জামিন দিয়েছেন। অপর ২টি আবেদন খারিজ করা হয়।
দিনাজপুর সিজেএম আদালতে মোট আবেদন পড়ে ৮০টি। এর মধ্যে ২৬ টির শুনানি শেষে ২০টিতে ২৪ জনকে জামিন দিয়েছেন আদালত। খারিজ করা হয় ৬টি আবেদন।
ঠাকুরগাঁও সিজেএম আদালতে একটি আবেদন মঞ্জুর করে একজনকে জামিন দেয়া হয়েছে। খারিজ করা হয়েছে তিনটি আবেদন।
সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ৫টির শুনানি নিয়ে তিনটি আবেদন খারিজ করা হয়েছে। অপর দুই মামলায় ২ জনকে জামিন দেন আদালত। সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালত ৮ আবেদনের মধ্যে ২টি মঞ্জুর করে ৮ জনকে জামিন দিয়েছেন।
সিলেট সিজেএম আদালতে ৯টির শুনানি নিয়ে ৮টিতে ১৫ জনকে জামিন দেয়া হয়েছে। সিলেট সিএমএম আদালতে ১৩টি আবেদনের শুনানি নিয়ে ৭টিতে ৭ জনের জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। খারিজ করা হয়েছে ৬টি আবেদন। সিলেট শিশু আদালতে একটি আবেদনের শুনানি নিয়ে এক শিশুকে জামিন দেয়া হয়েছে।
সুনামগঞ্জ সিজেএম আদালতে ৮টি আবেদনের শুনানি নিয়ে ৫টি মঞ্জুর করে ৫জনকে জামিন দেওয়া হয়েছে। বাকি তিনটি আবেদন খারিজ করা হয়েছে।
নেত্রকোনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত ৪টি আবেদনের শুনানি নিয়ে ৪ জনকে জামিন দিয়েছেন। নেত্রকোনা সিজেএম আদালতে তিনটি আবেদনের শুনানি নিয়ে ৪ জনকে জামিন দেয়া হয়েছে।
মাগুরা সিজেএম আদালত ১৫টি আবেদনের মধ্যে ১৩টি মঞ্জুর করে ১৮ জনকে জামিন দিয়েছেন। বাকি দুটি খারিজ করা হয়েছে।