দেশের অন্যান্য শ্রেণি-পেশার মানুষের পাশাপাশি করোনা ভাইরাসে জাতীয় সংসদে ভবনের নিরাপত্তায় কর্মরত ৫৮ জন আনসার সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে সংসদ ভবনের নিরাপত্তায় কর্মরত তিন পুলিশ ও একজন আনসার সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এদের মাধ্যমেই এসব আনসার সদস্য আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, এরা রাজধানীর শেরে-ই-বাংলা নগরের জাতীয় সংসদ ভবনের বটতলায় পুলিশের জন্য তৈরি করা ছাউনিতে থাকতেন। সংসদের গেটে দায়িত্ব পালন করতেন তারা। এতে সেখানে আসা-যাওয়া করা ভিআইপিদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপ-পরিচালক (যোগাযোগ) মেহেনাজ তাবাসসুম রেবিন গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, ১ মে সংসদের চার পুলিশ ও একজন আনসারের শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়। এ তিন পুলিশ সদস্য হলেন- আরিফ, বাদল ও মো. খালেক। আর আনসার সদস্য হলেন- মো. মাসুদ। এদের সংস্পর্শে আসা সবাইকে সংসদে অবস্থিত এমপিদের বিভিন্ন অফিসে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল। তবুও ছড়িয়ে পড়ে করোনা।
এ বিষয়ে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া মত ও পথকে বলেন, এই খবর শোনার পর আমরাও আতঙ্কে আছি। আক্রান্তদের মধ্যে নিজ বাসায় কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন একজন। প্রাতিষ্ঠানিক ও বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন কেউ কেউ। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল, সাজেদা মেডিকেল ও রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
সংসদের এক হুইপের ড্রাইভার বলেন, সংসদে দায়িত্বপালন করা এসব ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ায় ভিআইপিদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। একসঙ্গে এতগুলো করোনায় আক্রান্ত দেখে সেখানে বসবাস করা স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকাররা ভয়ে আছেন।
জানা যায়, এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তাসহ ১৬১ জন। এতে মারা গেছেন আব্দুল মজিদ নামে এক আনসার সদস্য। হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৪৩৫ জন।
এ বিষয়ে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর উপ-পরিচালক (যোগাযোগ) মেহেনাজ তাবাসসুম রেবিন জানান, আক্রান্তদের মধ্যে রয়েছেন বাহিনীর একজন উপ-মহাপরিচালক, ৬৪ জন ব্যাটালিয়ন আনসার, ৯৪ জন অঙ্গীভূত আনসার, একজন মহিলা আনসার ও একজন নার্সিং সহকারী।
উল্লেখ্য, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট ২৫০ জনের প্রাণহানি হলো। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৯৬৯ জন। সব মিলিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৬ হাজার ৬৬০ জনে।