প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ‘কভিড ফাইন্ডার’ নামে বিশেষ ধরনের অ্যাপ তৈরি করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক ও সাবেক শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির সহযোগী অধ্যাপক ওয়াহিদুজ্জামান ও ওই ইনস্টিটিউটের সাবেক শিক্ষার্থী রাজন হোসেন যৌথভাবে অ্যাপটি তৈরি করেন। এই অ্যাপ ব্যবহারকারী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন কি-না তা জানাতে সক্ষম বলে দাবি করছেন তারা।
ওয়াহিদুজ্জামান বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজিতে পোস্ট ডক্টরাল রিসার্চ ফেলো। রাজন হোসেন মন্সটারল্যাব বাংলাদেশে সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত।
এ বিষয়ে ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও কঠিন কাজ হচ্ছে রোগীর সংস্পর্শে যারা এসেছিলেন, তাদের শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া। ‘কভিড ফাইন্ডার’ দিয়ে এই কাজটি খুব সহজেই করা যাবে। এই অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে সম্ভাব্য আক্রান্ত ব্যক্তিদের দ্রুত টেস্ট করানো যাবে, আক্রান্ত নন, এমন ব্যক্তিদের টেস্টের পরিমাণ কমে যাবে এবং করোনার লক্ষণ দেখার আগেই অ্যাপ ব্যবহারকারী নিজের সম্পর্কে সচেতন হওয়ার সুযোগ পাবেন। ফলে মৃতের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমবে।
বাংলাদেশে অ্যাপটি চালু করতে সরকারের সহযোগিতা চেয়ে ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশেও এ ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করে সুবিধা পাওয়া সম্ভব। আমরা অ্যাপটির কাজ শেষ করেছি। প্রয়োজন হলে আরও নতুন ফিচার যোগ করতে পারব। তবে অ্যাপটি চালু করার জন্য সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।
যেভাবে কাজ করে কভিড ফাইন্ডার
অ্যাপটি ইন্সটল করার পর নাম ও ফোন নম্বর দিয়ে লগ ইন করতে হবে। এই নাম ও ফোন নম্বরের জন্য অ্যাপ একটি বিশেষ কোড (Universally Unique Identifier-UUID) তৈরি করে। অ্যাপটি শুধু ওই বিশেষ কোড সংগ্রহ করবে এবং নাম, ফোন নম্বর ও কোডসংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সার্ভারে পাঠিয়ে দেবে। এই সার্ভারের নিয়ন্ত্রণ সরকারি কোনো কর্তৃপক্ষের হাতে থাকতে পারে। ব্লুটুথ টেকনোলজি ব্যবহার করে এই কাজ সম্পন্ন হবে। নির্দিষ্ট অ্যাপে এই ব্যবহারকারীর তথ্য তিন সপ্তাহ পর্যন্ত থাকবে এবং পুরোনো তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুছে যাবে।