করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই ভাড়া করা ফ্লাইটে যুক্তরাজ্যের পথে উড়লেন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান। সঙ্গে তার স্ত্রীও ছিলেন। বৃহস্পতিবার তারা ঢাকা ছাড়েন।হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ওই চার্টাড (ভাড়া করা) ফ্লাইটে তিনি ও তার স্ত্রী নাসরিন খানা ছাড়া আর কেউ ছিলেন না।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এএইচএম তৌহিদ উল-আহসান গণমাধ্যমকে জানান, বৃহস্পতিবার দুজন যাত্রী নিয়ে একটি চার্টাড ফ্লাইট যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছে।
মোরশেদ খানের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাজ্যে যাওয়ার উদ্দেশে বৃহস্পতিবার বিকাল তিনটায় তারা বাসা থেকে বের হন। লন্ডনে তাদের ছেলে থাকেন।
এদিকে করোনাভাইরাসের কারণে চীন ছাড়া সব দেশের সঙ্গে আকাশ পথে যোগাযোগ বন্ধ আছে। তবে বিভিন্ন দেশ চার্টাড ফ্লাইট ভাড়া করে বাংলাদেশ থেকে তাদের নাগরিকদের নিজ দেশে ফেরার ব্যবস্থা করে দেন। একইভাবে বাংলাদেশিরাও যেসব দেশে আটকে ছিলেন তাদেরও আনা হয়েছে বিশেষ চার্টাড ফ্লাইটে করে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ১০ জুন সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খানের বিদেশ ভ্রমণের বিষয়ে ইমিগ্রেশনে চিঠি দিয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওইদিন দুদকের উপ-পরিচালক মো. সামছুল আলম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, এম মোরশেদ খান সপরিবারে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার বিদেশ যাওয়া ঠেকানো দরকার।
২০১৭ সালের ২৮ জুন রাজধানীর বনানী থানায় মোরশেদ খানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। মামলায় অভিযোগ করা হয়, পরস্পর যোগসাজশে আর্থিকভাবে লাভবান হতে প্রতারণা, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে এবি ব্যাংকের মহাখালী শাখা থেকে ৩৮৩ কোটি ২২ লাখ ১০ হাজার ৩৬৩ টাকা আত্মসাৎ করেন মোরশেদ খান। এ মামলার তদন্ত করছে দুদক।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ২১ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাজ্য, চীন, হংকং, থাইল্যান্ড ছাড়া সব দেশের সঙ্গে যাত্রীবাহী সব উড়োজাহাজ সংস্থার ফ্লাইট চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিল বেবিচক।
পরে আরেকটি আদেশে এই সময়সীমা আরও সাত দিন বাড়িয়ে চীন বাদে সব দেশের সঙ্গে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত ফ্লাইট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এই নিষেধাজ্ঞা কয়েক দফায় ১৪ এপ্রিল, ৩০ এপ্রিল, ৭ মে, ১৬ মে এবং ৩০ মে পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।
এদিকে ঋণ সংক্রান্ত বিষয়ে এক্সিম ব্যাংকের এমডিসহ আরেকজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে গুলি এবং নির্যাতনের অভিযোগ থাকা সিকদার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রন হক সিকদার ও তার ভাই দিপু হক সিকদার গত ২৫ মে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে থাইল্যান্ডের উদ্দেশে দেশ ছাড়েন। এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি সিকদার গ্রুপের মালিকানাধীন। ‘মুমূর্ষু রোগী’ হিসেবে তারা ব্যাংককে গিয়েছেন বলে জানা গেছে। এয়ার অ্যাম্বুলেন্স দুই জন যাত্রী নিয়ে দেশ ত্যাগের বিষয়টি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষও নিশ্চিত করেছে।