পদ্মা সেতুর ৪৫০০ মিটার দৃশ্যমান

শরীয়তপুর প্রতিনিধি

পদ্মা সেতু
পদ্মা সেতু। ফাইল ছবি

করোনা মহামারীর মধ্য দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর ৩০তম স্প্যানটি শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ২৬-২৭ নম্বর পিলারের ওপর বসানো হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সেতুর ৪ হাজার ৫০০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে।

আজ শনিবার সকাল ১০টায় জাজিরা প্রান্তে ২৬-২৭ নম্বর পিলারের ওপর ওই স্প্যানটি বসানো হয়।

universel cardiac hospital

বাকি থাকলো ১১টি স্প্যান বা দেড় কিলোমিটারের একটু বেশি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনার মধ্যে ও পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে চলছে।

পদ্মা সেতু বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর জানান, শুক্রবার সকাল ৭টায় পদ্মা সেতু ৩০তম স্প্যানটি নিয়ে মুন্সিগঞ্জের কুমারভোগ জেটি থেকে শক্তিশালী ভাসমান ক্রেন তিয়ানিহাউ শরীয়তপুরের জাজিরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়।

ওইদিন দুপুর ১২টায় ২৬-২৭ নাম্বার পিলারের কাছে পৌঁছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় শনিবার সকাল ৭ থেকে স্প্যানটি পিলারের ওপর বসানোর কাজ শুরু হয়। বেলা ১০টায় স্প্যানটি ২৬-২৭ নাম্বার পিলারের ওপর বসানো হয়।

করোনার কারণে পদ্মা সেতুর কাজে তেমন কোনো অসুবিধা হয়নি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনার মধ্যে ও পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে চলছে। করোনার কারণে পুরো প্রকল্পটি আইসোলেটেড রাখা হয়েছে। তাই এখানকার দেশি-বিদেশি কর্মীরা অনেকটা নিরাপদ। এখানে নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান করে কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে না। বাইরের কাউকেই এখানে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।

২০১৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সেতুর প্রথম স্প্যান, ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয় স্প্যান , ১০ মার্চ তৃতীয় স্প্যান, ১৩ এপ্রিল চতুর্থ স্প্যান, ২৯ জুন পঞ্চম স্প্যান বসানো হয়।

এ ছাড়া ২০১৯ সালের ২৩ জানুয়ারি ষষ্ঠ স্প্যান, ২০ ফেব্রুয়ারি সপ্তম স্প্যান, ২০ মার্চ অষ্টম স্প্যান, ১৮ এপ্রিল নবম স্প্যান ও ২-ফেব্রুয়ারি-২০২০ তারিখে ২৩তম স্প্যান বসানো হয়েছিল।

১১ ফেব্রুয়ারি ৩১ নম্বার পিলারের ওপর ২৪তম স্প্যান গত ১০ মার্চ ২৬তম স্প্যান বসানো হয়। গত ২৮ মার্চ ২৭তম স্প্যান ২৭ ও ২৮ নং পিলারে বসানো হয়েছিল।

১১ এপ্রিল ২৮তম স্পেন ও ৪ মে ২৯তম স্প্যান সেতুর মাওয়া প্রান্তে বসানো হয়। এ নিয়ে পদ্মা সেতুর কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৮৭ ভাগ। নদী শাসনের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭১ ভাগ। সেতুর সার্বিক কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭৯ ভাগ।

৩০তম স্প্যানের মধ্যে জাজিরা প্রান্তে ১৯টি আর মাওয়া প্রান্তে ১১টি স্প্যান বসানো হলো। বাকি ১১টি স্প্যান বা দেড় কিলোমিটার বাকি রইল। বর্ষার আগেই ৩১তম স্প্যান জাজিরা প্রন্তে বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

এ স্পেনটি বসানো হলে জাজিরা প্রান্তে সবকটি স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হবে। শুধু মাওয়া প্রান্তে ১০টি স্প্যান বসানোর বাকি থাকবে।শিগগিরই এসব বসানো হবে। পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে গোটা দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি হবে।

মঙ্গল মাঝির ঘাটের নুরে আলম মাদবর বলেন, ধীরে ধীরে পদ্মা সেতুর কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। ৩০তম স্পেন বসছে দেখে খুশি হলাম। আশা করি পদ্মা সেতু ২০২১ সালের মধ্যে যানবাহন চলাচলের উপযোগী হবে।

সেতু বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আ. কাদের মত ও পথকে বলেন, শনিবার পদ্মা সেতুর ৩০তম স্প্যানটি বসানো হলো। ইতোমধ্যে সেতুর প্রায় ৮৭.০৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। বর্ষার পূর্বে ৩১তম স্প্যানটি বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বাকি সব শিগগিরই বসিয়ে সেতুটি দৃশ্যমান করে তুলবো বলে আশা করছি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে