১৯ বছরেও চাষাড়ায় বোমা হামলার বিচার হয়নি, স্বজনদের ক্ষোভ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

চোখের জলে চাষাড়ায় নিহতদের স্মরণ

নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলার ঘটনা অতিবাহিত হয়ে গেছে ১৯ বছর। কিন্তু এখনও হয়নি বিচার। প্রতি বছর ১৬ জুন এলেই সকালে চাষাড়ায় ঘটনাস্থলে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

তবে এ বছর করোনা ভাইরাসের কারণে ১৬ জুন ছিল একটু অন্যরকম। তেমন লোকসমাগম হতে পারেনি। শুধু নিহত ও আহতদের পরিবার ছাড়া বাহিরের লোকজন ছিল না।

মঙ্গলবার সকাল ৯টায় বোমা হামলায় নিহতদের পরিবারের সদস্য এবং আহত ও পঙ্গুত্ব বরণকারীরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান স্মৃতির মিনারে। এ সময় তারা ১ মিনিট নীরবতা পালন করে চোখের জল ফেলেন।

নিহত পরিবারের সদস্যরা বলেন, সাত খুনের মতো মামলার রায় হয়ে গেছে। ২০০২ সালে আড়াইহাজারে চার খুনের মামলার রায় হয়ে গেছে। কিন্তু ১৯ বছর হয়ে গেছে এখনও এ বিচার পেলাম না। রাষ্ট্রের কাছে বিচার চাই। বঙ্গবন্ধু ও তার সপরিবারের খুনিদের বিচার যদি ৩০ বছর পর হয়ে থাকে, তা হলে আমরাও রাষ্ট্রের কাছে আশাবাদী বিচার পাব।

২০০১ সালের ১৬ জুন চাষাড়া আওয়ামী লীগ অফিসে বোমা হামলায় নিহতদের স্মরণে স্মৃতির মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সেদিনের ঘটনায় দুই পা হারানো মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি চন্দন শীল ও রতন দাস, মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ লুৎফর রহমান প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জে ২০০১ সালে ১৬ জুন চাষাড়া আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বোমা হামলার ঘটনায় ২০ নেতাকর্মী নিহত হন। ১৯ বছরেও বিচার হয়নি এ বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডের। এমনকি রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায়নি এসব পরিবার।

নিহতদের পরিবারগুলোর দাবি, নিহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও ১৬ জুন বোমা হামলা দিবস হিসেবে অন্তত নারায়ণগঞ্জে সরকারিভাবে পালন ও নিহতদের স্মরণে স্মৃতি ফাউন্ডেশন করা হোক।

সেদিন নিহত হয়েছিলেন শহর ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুল হাসান বাপ্পী, সহোদর সরকারি তোলারাম কলেজ ছাত্রছাত্রী সংসদের জিএস আকতার হোসেন ও সংগীতশিল্পী মোশাররফ হোসেন মশু, সংগীতশিল্পী নজরুল ইসলাম বাচ্চু, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের তৎকালীন যুগ্ম সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ভাসানী, নারায়ণগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবিএম নজরুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাইদুর রহমান সবুজ মোল্লা, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী পলি বেগম, ছাত্রলীগকর্মী স্বপন দাস, কবি শওকত হোসেন মোক্তার, পান-সিগারেট বিক্রেতা হালিমা বেগম, সিদ্ধিরগঞ্জ ওয়ার্ড মেম্বার রাজিয়া বেগম, যুবলীগকর্মী নিধু রাম বিশ্বাস, আবদুস সাত্তার, আবু হানিফ, এনায়েতউল্লাহ স্বপন, আবদুল আলীম, শুক্কুর আলী, স্বপন রায় ও অজ্ঞাত এক মহিলা।

এ হামলায় শামীম ওসমানসহ অর্ধশতাধিক আহত হন। তার ব্যক্তিগত সচিব চন্দন শীল, যুবলীগকর্মী রতন দাস দুই পা হারিয়ে চিরতরে বরণ করেছেন পঙ্গুত্ব।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে