বিশ্ব নেতাদের মতোই নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী: বিদিশা

ডেস্ক রিপোর্ট

বিদিশা
বিদিশা। ফাইল ছবি

সাবেক প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রাক্তন স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক বলেছেন, ‘করোনার সংকট মোকাবেলায় আমাদের সরকার প্রধান (শেখ হাসিনা) যেভাবে কাজ করছেন তাতে তিনি সফল হবেন। বিশ্বের অন্যান্য সফল নেতার মতোই তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।’ একটি অনলাইন গণমাধ্যমের লাইভ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

বিদিশা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন একজন ফ্যাশন ডিজাইনার। এছাড়া বিদিশা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এবং একজন সফল উদ্যোক্তাও। সিঙ্গাপুরের লাসাল ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাশন ইনস্টিটিউশনে লেখাপড়া করেছেন। এছাড়া ইতালি, ফ্যান্স, জার্মানসহ বিভিন্ন দেশে গিয়েছেন পড়াশোনার জন্য। তিনি দেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আবু বকর সিদ্দিকের মেয়ে।

universel cardiac hospital

বিদিশা সিদ্দিক বলেন, ‘সরকারের শুধু প্রশংসা করব না। সমালোচনারও জায়গা আছে। এবারের বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে যে বরাদ্দ, সেটা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল মনে হচ্ছে। তাছাড়া করোনা ক্রাইসিসে প্রমাণ হয়েছে আমাদের স্বাস্থ্যখাত কতটা ভঙ্গুর। এদিকে আমাদের নজর দিতে হবে।’

জার্মানির চ্যান্সেলর, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী যেমনভাবে করোনায় সফল হয়েছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রীও দেশকে করোনামুক্ত করবেন বলে আশাবাদি বিদিশা। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রীও তেমনভাবে সফল হবে— এ ব্যাপারে আমি আশাবাদি। কারণ, তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে এবং সাফল্যের সঙ্গে বিষয়টি হ্যান্ডেল করছেন। তার ওপর আমাদের আস্থা আছে।’

অনুষ্ঠানে বিদিশা তার শৈশব, বেড়ে ওঠা, শিক্ষাজীবন, কর্মজীবন, বিয়েসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। বাবা আবু বকর সিদ্দিকের সঙ্গে ছোটবেলার অনেক স্মৃতি জানান বিদিশা। জেনারেল এরশাদের মৃত্যুর পর তার প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসায় ওঠেন বিদিশা সিদ্দিক। তাদের সন্তান এরিককে ভালো রাখতেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নেন।

রংপুরের মানুষ অত্যন্ত সহজ-সরল উল্লেখ করে বিদিশা বলেন, তারা (রংপুরবাসী) এরশাদ সাহেবকে খুব ভালোবাসতেন। এখনও তারা এরশাদ সাহেবকে ভালোবাসেন। যাকে বলে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা। একজন মা যেমন তার সন্তানকে ভালোবাসে, রংপুরের মানুষও তেমনিভাবে এরশাদ সাহেবকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসে। মৃত্যুর পরও তাদের সেই ভালোবাসা এতটুকু কমেনি। রংপুরের অনেক মানুষ এখনও আমাকে ফোন দেয়। এরিকের (বিদিশি-এরশাদের পুত্র) খোঁজ-খবর নেয়।’

আবার বিপরীত চরিত্রের লোকও আছে বলেন জানান বিদিশা। বলেন, এরিকের বাবা যাদেরকে এমপি-মন্ত্রী বানিয়েছেন তারা কেউ এখন আর এরিকের খবর নেয় না। ওর জন্ম দিনেও একটা ফোন দেয়নি, উইশ করতে আসেনি। অথচ এরশাদ সাহেব বেঁচে থাকা অবস্থায় এরিকের জন্মদিনে তারা এসে ভিড় করত। সুতরাং সবরকমই আছে। এর মধ্য দিয়ে যেতে হবে।’

বিদিশা বলেন, ‘সবচেয়ে আশার জায়গা হলো- এরিক খুব ভালো করে বুঝতে পারছে বিষয়গুলো। আমাকে আর বোঝাতে হয় না বিষয়গুলো। তাছাড়া অনেক এক্স আর্মি অফিসার এরিকের খবর নেন। ওর জন্মদিনে দেশের অনেক বড় বড় শিল্পী এসেছিল। কাউকে দাওয়াত করতে হয়নি, ভালোবাসার টানেই তারা এসেছে। বিষয়টি দেখে আমার চোখ দিয়ে পানি এসেছে। এত লোক এরিককে ভালোবাসে।’

রাজনীতিতে আসবেন কিনা এমন প্রশ্নে বিদিশা বলেন, হুট করে তো রাজনীতিতে আসা যায় না। প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে। তবে রংপুরের মানুষ যদি চাই তখন দেখবো।

হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের শেষ দিনগুলো সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘উনার সঙ্গে আমার বিচ্ছেদটা রাজনৈতিক কারণে হয়েছিল। মনের বিচ্ছেদ কখনও হয়নি। মৃত্যুর আগে হাসপাতালে ডেকে নিয়ে উনি চল্লিশ মিনিট আমার হাত ধরে বসেছিলেন। মাপ চেয়েছেন। সুতরাং আমি মনে করি তিনি আমাদের থেকে একেবারে চলে যাননি। এখনও আমাদের মাঝে আছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমার কিন্তু আরেকটা মেয়ে আছে। ওর নাম মায়া। এক মাস বয়সে ওকে আমি দত্তক নিয়েছিলাম। ও এখন আমার সাথেই আছে। করোনা সংকট কেটে গেলে ও বৃটেনে গিয়ে ওর ভাই-বোনের কাছে থেকে লেখা-পড়া করবে

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে