মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের পর নতুন করে দারিদ্র্যের কাতারে দেশের এক কোটি ৬৪ লাখ মানুষ যুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা সংস্থা (বিআইডিএস)। তাদের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারির কারণে মানুষের উপার্জন কমে যাওয়ায় দারিদ্র্যের এই হার বেড়েছে।
বুধবার বিআইডিএস-এর এক ওয়েবিনারে এই তথ্য জানানো হয়। ‘ইন দ্য শ্যাডো অব কোভিড কোপিং, অ্যাডজাস্টমেন্ট, রেসপনসেস’ শীর্ষক এই ক্রিটিক্যাল কনভারসেশন্স ওয়েবিনারে সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো বিনায়ক সেন জানান, করোনার আগে ২০ দশমিক ৪ শতাংশ দরিদ্রতার হার ছিল, সেটা এখন ২৯ দশমিক ৪ শতাংশ হয়েছে।
বিনায়ক সেন বলেন, ‘আমরা ধনীদের বাইরে রাখছি। কিন্তু যারা লেবারিং ক্লাস, উদ্যোক্তা হতে পারে, ক্যাজুয়াল ওয়ার্কার হতে পারে অথবা বেসরকারি চাকরিজীবী হবে পারে, তাদের আয় কমেছে। গত এপ্রিল, মে ও চলতি জুন মাসে কোভিডের সময়ে শহরের শ্রমিকের আয় কমেছে ৮০ শতাংশ এবং গ্রামীণ শ্রমিকের আয় কমেছে ১০ শতাংশ।’
কোভিডের অভিঘাতে দেশে দারিদ্র্য বিমোচনের হার কমে যাবে জানিয়ে এই গবেষক বলেন, ‘এতে ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করার যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তা অর্জন করা কঠিন হয়ে যাবে। এই পরিস্থিতিতে ব্যক্তির স্বাস্থ্য ব্যয় হ্রাসে এই খাতে বরাদ্দ জিডিপির ২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে ৩ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। পাশাপাশি সরকারকে আরও সমতাভিত্তিক মডেল অনুসরণ করতে হবে।’
ওয়েবিনারে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘দারিদ্র্য নিয়ে যে বিষয় তুলে ধরা হয়েছে এটার ফলাফল আমরা দেখবো। তবে কিছু কিছু আশার আলোও দেখা যায়, সরকারের করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা আশা করছি ওভারকাম করবো। আমরা স্থায়ী লকডাউন করতে পারবো না। আমাদের সরকার বর্তমান যে এপ্রোচ নিয়েছে তাতে পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে ভালো আছে। করোনার কারণে সারা বিশ্বই আজ আক্রান্ত, কেউ বলতে পারছে না এটা কবে শেষ হবে।’
সামাজিক কর্মসূচির আওতায় সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এমন তথ্য দিয়ে এম এ মান্নান বলেন, ‘যারা দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে, করোনার কারণে যাদের ক্ষতি হয়েছে তাদের একটা ডাটাবেজ তৈরির জন্য পদক্ষেপ নেয়া হবে।;
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) কাজ করছে, বিভিন্ন গবেষণা থেকে তথ্য আসছে, নির্বাচন কমিশনেরও কিছু তথ্য রয়েছে। সব তথ্য নিয়ে একটা সম্মিলিত তথ্য তৈরি করতে হবে। যাতে আমরা কাউকে সহায়তা করতে চাইলে সহজেই তাকে দিতে পারি। তার প্রতি হাত বাড়াতে পারি।’