কুয়েতে মানব ও অবৈধ মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুলের নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কুয়েতের সে নাগরিক কি-না, সে বিষয়ে কুয়েতের সাথে আমরা কথা বলছি। আর যদি এটা হয়, তার পদটি খালি করে দিতে হবে। সবকিছু আইন অনুযায়ী চলবে।
বুধবার (৮ জুলাই) জাতীয় সংসদে বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের বক্তব্যের জবাবে একথা বলেন তিনি।
হারুনুর রশীদ পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্য দিতে গিয়ে পাপুল কুয়েতে সে দেশের নাগরিক হিসেবে গ্রেফতার হয়েছেন বলে জানান। এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী অন্য দেশের নাগরিক কখনো এদেশের সংসদ সদস্য হতে পারেন না।
পরে পাপুল বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি (পাপুল) কিন্তু স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য। সে আমাদের নমিনেশন চেয়েছিল আমি কিন্তু তাকে নমিনেশন দেইনি। কিন্তু সে স্বতন্ত্র ইলেকশন করে এসেছে। ওই আসনটি আমরা জাতীয় পার্টিকে দিয়েছিলাম। জাতীয় পার্টির নমিনেশন পেয়েছিল, সে ইলেকশন করেনি। এর ফলে ওই লোকটি জিতে আসে। এরপর তার ওয়াইফ (সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম), সেও যেভাবেই হোক আসে। কাজেই এখানে আমাদের করার কিছু নেই।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কুয়েতের সে নাগরিক কি-না সে বিষয়ে কুয়েতের সাথে আমরা কথা বলছি। আর যদি এটা হয় তার পদটি খালি করে দিতে হবে। সবকিছু আইন অনুযায়ী চলবে।
টেস্ট না করেই করোনা ভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট দেয়াসহ নানা অভিযোগে সিলগালা করে দেয়া হয়েছে ঢাকার উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতাল। এ ঘটনায় হাসপাতালটির মালিক এখনো গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। এছাড়া করোনাকালীন সরকারের প্রণোদনা দুর্নীতি নিয়ে প্রকাশিত খবরের কথা উল্লেখ করেন সংসদে।
এসবের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মাননীয় সংসদ সদস্য ঠিক বলেছেন। তিনি পত্রিকা দেখিয়ে বলেছেন। কিন্তু উনি এটা বলতে ভুলে গেছেন যে তথ্যগুলো তিনি দিলেন এগুলো কিন্তু আমরা সরকার পক্ষ থেকেই ধরেছি। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই কিন্তু সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। এই অনিয়মগুলো আমরা খুঁজে বের করেছি। অপরাধীদের ইতোমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। ওই হাসপাতালের তথ্য তিনি আগেভাগেই দিলে আমি খুশি হতাম। কিন্তু র্যাব জানার পর সেখানে গেছে, খুঁজে বের করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
সরকারপ্রধান বলেন, আর যে হাসপাতালের (রিজেন্ট হাসপাতাল) কথা বলা হয়েছে সেই তথ্য আমরা নিজেরাই বের করেছি।
করোনাকালীন সময়ে প্রণোদনার দুর্নীতির জবাব দিতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, অন্ততপক্ষে ৫০ লাখ পরিবারকে আমরা যে সহযোগিতা দেব, সেই তালিকা যাচাই করা হয়েছে। সেই সাথে তাদের আইডি কার্ড, ভোটার লিস্টের নাম সবকিছু মিলিয়ে এই তালিকায় আমরা খুঁজে খুঁজে বের করছি। আজকে মাননীয় সংসদ সদস্য যে তথ্য দিলেন, এই তথ্যটা কিন্তু আমরা আগে খুঁজে খুঁজে বের করেছি। শুধুমাত্র কাউন্সিলর, মেম্বার, চেয়ারম্যানদের তালিকা আসছে। তাদের তালিকা ধরে ধরে ফোন নম্বর ও ন্যাশনাল আইডি কার্ড মিলে বাংলাদেশ ব্যাংকে একটা সিস্টেম করে দিয়েছি। ওখান থেকে যাচাই-বাছাই করে করে তাদের সাহায্য দেয়া হবে।