দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের তাণ্ডব চলাকালীন সময়ে আমাদের মাঝে সমবেত হয়েছে মুসলিম উম্মাহর বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা। প্যানডেমিক সিচুয়েশনে পশু কোরবানির ক্ষেত্রে আমাদেরকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ এবং বর্জ্যব্যবস্থাপনার দিকে খেয়াল রাখা জরুরি। প্রতিবছরই পশু কোরবানির পরপরই আমাদের প্রধান চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় বর্জ্য অপসারণ। এ বিষয়ে আমাদের সামান্য অসাবধানতার কারণে দেখা দিতে পারে পরিবেশগত নানান সমস্যা। মূলত কোরবানির পশুর বর্জ্য যেখানে-সেখানে ফেলার কারণে তা পচে দুর্গন্ধ ছড়ানোর মাধ্যমে চারপাশের পরিবেশ দূষিত করে তুলে। শুধু তাই নয়, নালা বা নর্দমায় ফেলা বর্জ্য থেকে ছড়ায় নানা ধরনের রোগের জীবাণু। অতিরিক্ত বর্জ্যরে চাপে নর্দমা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে। অল্প বৃষ্টিতেই নর্দমার পানি আটকে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। তখন এসব বর্জ্য অপসারণ করতেও হিমশিম খেতে হয় সিটি কর্পোরেশন বা পৌরসভাকে।
বর্জ্য অপসারণ করার একটি অন্যতম উপায় হল কোরবানির আগেই বাড়ির আঙ্গিনা কিংবা পরিত্যক্ত জায়গায় একটা গর্ত খুঁড়ে রাখা। কোরবানির পর পশুর বর্জ্য সেখানে ফেলে মাটিচাপা দেয়া। তবে শহরাঞ্চলে গর্ত খোঁড়ার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে পানি ও গ্যাসের পাইপ, বিদ্যুৎ ও টেলিফোনের তার ইত্যাদি কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। কোরবানির সব কার্যক্রম শেষে রক্তমাখা রাস্তাঘাট ধুয়ে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। জীবাণু যেন ছড়াতে না পারে সেজন্য নোংরা জায়গা পরিষ্কারের সময় ব্লিচিং পাউডার বা জীবাণুনাশক ব্যবহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে আমাদের একটু সচেতনতা আর সঠিক পরিকল্পনাই এ সমস্যার সমাধান দিতে পারে।
২. সম্প্রতি স্বাস্থ্যখাতে অনিয়মের সাথে জড়িত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের গ্রেফতার ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ অন্যান্য পদে যে পরিবর্তনগুলো হচ্ছে আমরা এসব পরিবর্তনকে স্বাগত জানাই। তবে শুধু পরিবর্তন করলেই চলবে না যারা এসব অপকর্মের জন্য দায়ী তাদেরকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে এবং নেপথ্য নায়কদেরও বিচারের আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। বর্তমান প্যানডেমিক সিচুয়েসনে স্বাস্থ্যখাতই সরকারের প্রধান লক্ষবস্তু হওয়া উচিত এবং সেই অনুযায়ী কাজ করা উচিত।
মূলত স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি বহুদিনের একটা অব্যবস্থাপনা এবং এর শিকর বহুদূর পর্যন্ত বিসৃত। আমরা মনে করি, এ খাতের অনিয়ম ও দুর্বলতাগুলো দূর করতে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে চলমান শুদ্ধি অভিযান অব্যাহত রাখা উচিত। পাশাপাশি এ খাতে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ, চুক্তি ও ব্যয়ের হিসাবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত এবং বিভিন্ন সময় যে ক্রয় চুক্তিগুলো হয় সেগুলোকে আধুনিকায়ন করা উচিত।