কক্সবাজারের এসপির ফোনালাপ যাচাই করছে র‌্যাব

ডেস্ক রিপোর্ট

র‌্যাব মূখপাত্র
র‌্যাব মুখপাত্র লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ।ফাইল ছবি

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ফাঁস হওয়া কক্সবাজারের এসপির ফোনালাপ যাচাই-বাছাই ও পর্যালোচনা চলছে বলে জানিয়েছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

শনিবার সন্ধ্যায় বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমের মাধ্যমে এসপির কথোপকথন র‌্যাবের নজরে এসেছে। এই ফোনালাপের বিষয়টি যাচাই-বাছাই ও পর্যালোচনার পরিপেক্ষিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

universel cardiac hospital

গত ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর এলাকায় চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর (অব.) সিনহা রাশেদ খান। ঘটনার পর অভিযুক্ত পুলিশের এসআই লিয়াকতের সঙ্গে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনের একটি ফোনালাপ গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে। সেখানে এসপি এই ঘটনা আড়াল করতে গণমাধ্যমকে কী বলতে হবে তা এসআইকে শিখিয়ে দেন।

র‌্যাবের প্রতি গণমানুষের আস্থা আছে, সর্বোপরি সেই জায়গা থেকে র‌্যাব সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে প্রভাবমুক্ত হয়ে মামলাটির তদন্ত কাজ পরিচালনা করবে বলে জানান এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই মামলার তদন্ত নিরপেক্ষভাবে শেষ করে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত এবং তাদের আইনের আওতায় সোপর্দ করা আমাদের মুখ্য উদ্দেশ্য।’

নিহতের মেজরের সঙ্গে থেকে যারা ভিকটিম হয়েছেন এবং ল্যাপটপ ও হার্ডডিস্ক খোয়া যাওয়ার ঘটনায় র‌্যাব কী ব্যবস্থা নেবে এমন প্রশ্নে আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘এই ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। যেখানে নিহত মেজরের সঙ্গে থাকা সাহেদুল ইসলাম সিফাত এবং শিপ্রা দেবনাথের মামলায় দুজন আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে। আইনজীবীরা তাদের জামিনের আবেদন করবেন এবং মামলার প্রয়োজনে দুজনকে র‌্যাব জিজ্ঞাসাবাদ করবে। কারণ মেজর সিনহার বোনের করা মামলায় সিফাত একজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী। এছাড়া খোয়া যাওয়া জিনিস উদ্ধারের বিষয়টি দেখবেন তদন্ত কর্মকর্তা।’

নিহত মেজরের বোন বাদী হয়ে যে মামলা করেছেন সেখানে নয়জনকে আসামি করা হয়েছে। কিন্তু জেলহাজতে রয়েছেন সাতজন। বাকি দুজনের বিষয় র‌্যাব কী অনুসন্ধান করছে জানতে চাইলে লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘আমরা সাতজনের নাম জানতে পেরেছি। বাকি দুজনের নাম আমরা পাইনি। আর বাহারছড়া ক্যাম্পে বাদীর করা মামলায় যে দুই নাম আছে, এই নামে কোনো পুলিশ সদস্য নেই। তদন্ত করে তাদের বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এই ঘটনায় র‌্যাব কোন কোন বিষয় নিয়ে তদন্ত করবে জানতে চাইলে বাহিনীটির মুখপাত্র বলেন, ‘এটা একটি স্পর্শকাতর মামলা। পাশাপাশি গণমাধ্যমে যে বিষয়গুলো এসেছে সব বিষয় সমন্বিত আকারে কাজ করা হবে। বিশেষ করে হত্যাকাণ্ডের মূল মোটিভ কী ছিল, কোন কোন ব্যক্তি নির্দিষ্টভাবে দায়ী তদন্তে এই বিষয়গুলো নিয়ে র‌্যাব কাজ করবে।’

আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘র‌্যাব এখনো মামলার আসামিদের হেফাজতে নেয়নি। আগামীকাল তাদেরকে পর্যায়ক্রমে হেফাজতে নেয়া হতে পারে বলে প্রত্যাশা করছি। এরপরই বিস্তারিত আরও তথ্য দেয়া সম্ভব হবে।’

আলোচিত এই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি বাহারছড়া ফাঁড়ির দায়িত্বরত পুলিশ ইন্সপেক্টর লিয়াকত। আর দুই নম্বর আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। ইতিমধ্যে ওসি প্রদীপসহ আত্মসমর্পণ করে সাতজন বৃহস্পতিবার কারাগারে গেছেন। তাদের মধ্যে তিনজনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। আর বাকি চারজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছে। আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছে র‌্যাব।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে