একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রথম ধাপে প্রায় ৬৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভাগ্যে কলেজ মেলেনি। প্রথম ধাপে আবেদন করেছিল ১৩ লাখ ৪২ হাজার ৬৯৩ জন। আর ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছে ১২ লাখ ৭৭ হাজার ৭২১ জন শিক্ষার্থী।
আজ মঙ্গলবার রাতে একাদশ শ্রেণির ভর্তির ফল প্রকাশের পর আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ড থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ড ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক হারুন অর রশিদ বলেন, প্রথম ধাপে আবেদন করেছিল ১৩ লাখ ৪২ হাজার ৬৯৩ জন। আর ভর্তির জন্য মনোনীত হয়েছে ১২ লাখ ৭৭ হাজার ৭২১ জন শিক্ষার্থী। এরমধ্যে ঢাকা বোর্ডে তিন লাখ তিন হাজার ৯১ জন আবেদন করে দুই লাখ ৮৮ হাজার ২৯৮ জন ভর্তির সুযোগ পেয়েছে বলেও জানান তিনি।
তবে জিপিএ-৫ পেয়েও এখনো অনেক শিক্ষার্থী তার কাঙ্ক্ষিত কলেজে ভর্তি হতে পারেনি। ভালো কলেজগুলোর অতিরিক্ত চাপ থাকার কারণে এমন হয়েছে বলে জানা গেছে।
অধ্যাপক হারুন অর রশিদ আরও বলেন, ‘ভর্তির জন্য প্রথম ধাপে আবেদনে ৬৪ হাজার ৯৭২ জন কাঙ্ক্ষিত কলেজ পায়নি। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন জিপিএ-৫ ধারী রয়েছে। ভালো কলেজগুলোতে আসনের অতিরিক্ত আবেদন হওয়ায় তারা প্রথম ধাপে পচ্ছন্দের কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়নি।’
তবে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে আবেদন করতে পারবে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি অনুমোদিত ১৪৮টি কলেজে ভর্তির জন্য কোনো শিক্ষার্থী আবেদন করেনি বলেও জানা যায়।
যেভাবে ফল জানা যাবে
শিক্ষার্থীদের এসএমএসে ফল জানানো হবে। একইসঙ্গে একটি সিকিউরিটি কোড পাঠানো হবে। এ কোডটি ভর্তি নিশ্চায়নের জন্য সংগ্রহ করতে হবে। আর ভর্তির নির্ধারিত ওয়েবসাইটেও একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ফল জানা যাবে বলে জানান অধ্যাপক হারুন অর রশিদ।
তিনি আরও বলেন, প্রথম ধাপে মনোনীত হওয়া শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চায়ন করতে হবে ২৬ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট রাত ৮টা পর্যন্ত। শিক্ষার্থী সিলেকশন নিশ্চায়ন না করলে প্রথম পর্যায়ের সিলেকশন এবং আবেদন বাতিল হবে।
বোর্ডের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, প্রথম ধাপে আবেদন করেছে ১৩ লাখ ৪৩ হাজার শিক্ষার্থী। আবেদনের শেষ সময় ছিল বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত। ভর্তি কার্যক্রম চলবে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। শিক্ষার্থীদের www.xiclassadmission.gov.bd ওয়েবসাইটে আবেদন করতে হবে। বিকাশ, নগদ, সোনালী ব্যাংক, টেলিটক এবং রকেটের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করা যাবে।
দ্বিতীয় পর্যায়ে আবেদন গ্রহণ করা হবে ৩১ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত। পছন্দক্রম অনুসারে প্রথম মাইগ্রেশনের ফল ও দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ হবে ৪ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায়। দ্বিতীয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সিলেকশন নিশ্চায়ন করা হবে ৫ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টা পর্যন্ত। শিক্ষার্থী সিলেকশন নিশ্চায়ন না করলে দ্বিতীয় পর্যায়ের সিলেকশন ও আবেদন বাতিল হবে।
তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন গ্রহণ করা হবে ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর। পছন্দক্রম অনুযায়ী দ্বিতীয় মাইগ্রেশনের ফল ও তৃতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ হবে ১০ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায়। তৃতীয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সিলেকশন নিশ্চায়ন করতে হবে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত। সিলেকশন নিশ্চায়ন না করলে আবেদন বাতিল হবে। কলেজভিত্তিক চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায়। ভর্তি কার্যক্রম চলবে ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
এ বছর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা, প্রবাসী ও বিকেএসপি কোটা বহাল থাকছে। তবে অন্যান্য কোটা নিয়ে নীতিমালায় কিছু উল্লেখ করা হয়নি। একাদশে বিশেষ কোটা হিসেবে ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা, দশমিক ৫ শতাংশ বিকেএসপি এবং দশমিক ৫ শতাংশ প্রবাসী কোটা বহাল থাকছে। প্রবাসীদের সন্তান ভর্তির বিষয়ে সরাসরি বোর্ডে আবেদন করতে হবে।
এবার ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার এমপিওভুক্ত কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা। ঢাকার মধ্যে আংশিক এমপিওভুক্ত ও এমপিওবিহীন প্রতিষ্ঠানের বাংলা মাধ্যমে ভর্তি ফি নয় হাজার ও ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তি ফি ১০ হাজার টাকা। কোনো প্রতিষ্ঠানেই উন্নয়ন ফি তিন হাজার টাকার বেশি নেয়া যাবে না। প্রতিটি খাতে অর্থ আদায়ের ক্ষেত্রে রশিদ দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মফস্বল ও পৌর এলাকার জন্য ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার টাকা, পৌর জেলা সদরে এক হাজার টাকা, ঢাকা ব্যতীত অন্যান্য মেট্রোপলিটন এলাকায় তিন হাজার টাকার বেশি ভর্তি ফি নেয়া যাবে না।
প্রসঙ্গত, একজন শিক্ষার্থীকে কমপক্ষে পাঁচটি কলেজ পছন্দক্রম অনুসারে আবেদন করতে হয়েছে। সর্বোচ্চ ১০টি কলেজে আবেদন করা যাবে। শিক্ষার্থীর মেধা ও পছন্দ অনুসারে তাকে নির্দিষ্ট কলেজে ভর্তির জন্য মনোনীত করা হবে।