সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় রিমান্ডে থাকা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) আরও দুই সদস্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা জবানবন্দি দেন।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে মামলার তদন্ত সংস্থা র্যাব এপিবিএনের এএসআই শাহজাহান ও কনস্টেবল রাজীবকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে হাজির করে। দুপর ২টা থেকে তাদের স্বীকারোক্তি নেয়া শুরু হয়। শেষ হয় সন্ধ্যা ৬টায়।
এর আগে বুধবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় এপিবিএনের অপর সদস্য কনস্টেবল মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত তার স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করেন আদালত। স্বীকারোক্তি নেয়া শেষে তাদের কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। ঘটনার পর পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় দুটি ও রামু থানায় একটি মামলা করে। এ মামলায় সিনহার দুই সফরসঙ্গী কারান্তরীণ হন। পরে তারা জামিনে মুক্ত হন।
গত ৫ আগস্ট কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। এতে নয়জনকে আসামি করা হয়। আসামিরা হলেন- টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়ার শামলাপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলী, এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, এএসআই লিটন মিয়া, পুলিশ কনস্টেবল সাফানুর রহমান, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, মো. মোস্তফা ও এসআই টুটুল। এদের মধ্যে আসামি মোস্তফা ও টুটুল পলাতক রয়েছেন। তাদের নামে কোনো পুলিশ সদস্য কক্সবাজারে কর্মরত নেই বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ। কিন্তু এ দুই আসামির পরিচয় শনাক্তে জেলা পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করেছে র্যাব।
এ মামলায় নথিভুক্তসহ সহযোগী আসামি হিসেবে এ পর্যন্ত সাত পুলিশ সদস্য, এপিবিএনের তিন সদস্য ও টেকনাফ থানা পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষীসহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
গ্রেফতারের পর বিভিন্ন সময় প্রত্যেকের সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। রিমান্ড শেষে গত সোমবার (২৪ আগস্ট) ওসি প্রদীপসহ পুলিশের সাত সদস্যের আবারও সাতদিন করে রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। প্রথম দফা রিমান্ড শেষ হওয়ার আগেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলেন এপিবিএনের তিন সদস্য কনস্টেবল আবদুল্লাহ, রাজীব ও এএসআই শাহজাহান।