যুবদলের ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি ও ঢাকা-১৮ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী নেতা এস এম জাহাঙ্গীর হোসেনকে লাঞ্ছিত করেছে বৃহত্তর উত্তরার ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। রবিবার রাজধানীর দক্ষিণ খানে গুম হওয়া ছাত্রনেতা নূর হোসেন হিরুর বাসায় এই ঘটনা ঘটে। পরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
জানা গেছে, গত সিটি নির্বাচনে কাউন্সিল পদে প্রার্থী দেয়া, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সঙ্গে আঁতাত করা, ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ইন্ধনের অভিযোগে লাঞ্ছিত হন এই যুবদল নেতা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে উত্তর সিটির বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও নগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আঞ্জু গুম হওয়া ছাত্রনেতার বাসায় আসেন। তাবিথ আউয়াল আসার খবরে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী এম কফিল উদ্দিন ও এস এম জাহাঙ্গীরও আসেন নূরের বাসায়। এসময় বৃহত্তর উত্তরার সাতটি থানা এলাকার শতাধিক ছাত্রদল নেতাকর্মী জাহাঙ্গীরকে বাসায় ঢুকতে বাধা দেন। এক পর্যায়ে জাহাঙ্গীর ও তার লোকজনের সঙ্গে ছাত্রদল নেতাদের হট্টগোল হয়। পরে তাবিথ আউয়ালের হস্তক্ষেপে বাসায় ঢুকলেও একটি রুমের মধ্যে একপ্রকার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন জাহাঙ্গীর।
এসময় ছাত্রদলের নেতারা জাহাঙ্গীরের উপস্থিতিতে তাবিথ আউয়াল ও নগর বিএনপির সহসভাপতি মুন্সি বজলুল বাসিত আঞ্জুর কাছে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ দেন। বিশেষ করে উত্তরায় জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সংঘর্ষে প্রায় ১৫ জন ছাত্রদল নেতাকর্মীকে আহত করার বিষয়টি তুলে ধরেন। এছাড়া গুম হওয়া ছাত্রনেতা হিরুর বড় ভাই আমজাদ হোসেন এ ওয়ার্ডে বিএনপির মনোনয়ন চাইলেও তাকে মনোনয়ন না দিতে এসএম জাহাঙ্গীর দলের হাইকমান্ডের কাছে জোর বিরোধিতা করেন বলে অভিযোগ করেন। গুম হওয়া হিরুর ভাই আমজাদ হোসেনকে বিএনপির কমিটি থেকে জাহাঙ্গীর বাদ দিয়েছেন এমন অভিযোগ তুলে তাকে কেন এখানে আনা হয়েছে সে কৈফিয়তও নেতাদের কাছে চান বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতারা।
এসময় স্থানীয় এক বিএনপি নেতা তাবিথ আউয়ালের কাছে অভিযোগ করে বলেন, সিটি নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত সাতজন কাউন্সিলর প্রার্থী দলের মনোনয়ন বোর্ডের কাছে জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে স্থানীয় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সঙ্গে আঁতাত করেছেন বলে লিখিত অভিযোগ দেন। অথচ তার পছন্দের প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল।
পরে তাবিথ আউয়ালের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হলেও জাহাঙ্গীরের বের হওয়ার সময়ও তাড়া দেন নেতাকর্মীরা।
তবে লাঞ্ছিতের ঘটনা অস্বীকার করে এস এম জাহাঙ্গীর বলেছেন, ‘এমন কিছু হয়নি। তাবিথ আউয়াল বিএনপির মেয়র প্রার্থী ছিলেন, উত্তরার কিছু নেতাকর্মীকে দলে পদ দেয়ার কথা ছিল। তারা তাবিথ আউয়ালের কাছে জানতে চেয়েছিল, তাদের কেন পদ দেয়া হয়নি। পরে তাদের তাবিথ আউয়াল নিজেই শান্ত করেছেন।’
অবরুদ্ধ হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অবরুদ্ধ নয়, ছোট রুমে অনেক মানুষ থাকায় সেখানে খুব ভিড় ছিল। আর কিছু না।’