রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দফায় দফায় সংঘর্ষে আহত ১২

কক্সবাজার প্রতিনিধি

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংঘর্ষ

কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাঁদাবাজি, অপহরণ ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দফায়-দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ১২ জন আহত হয়েছেন।

রোববার বেলা ১১টার দিকে কুতুপালং রেজিস্টার্ড ও আন-রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝামাঝি স্থানে দুই ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়।

universel cardiac hospital

এর আগে নুর আলম নামে এক রোহিঙ্গাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় প্রথমে কক্সবাজার পরে চট্টগ্রাম হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনি কুতুপালং টু-ইস্ট ক্যাম্পের আহমদ হোসেনের ছেলে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

অন্যান্য আহতদের মধ্যে মোহাম্মদ ইউছুফ ও ছলিম উল্লাহর নাম পাওয়া গেলেও বাকিদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। আহতরা ক্যাম্প সংলগ্ন এনজিও পরিচালিত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ঘটনার পর থেকে রোহিঙ্গাদের কেউ কেউ অন্য স্থানে আশ্রয় নিতেও দেখা গেছে। দুপুর ২টার দিকে ক্যাম্প প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে দুই পক্ষের মধ্যে এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আল ইয়াকিনের শীর্ষ নেতা মুন্না গ্রুপ গত তিন দিনে ১০ জন রোহিঙ্গাকে অপহরণ করেছে। এর মধ্যে মুক্তিপণ দিয়ে রোববার সকালে ফিরে এসেছে ছয়জন। তারা হলেন কুতুপালং রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের বি ব্লকের রহমত উল্লাহ, ডি ব্লকের মৌলভী জিয়াবুর রহমান, ছৈয়দ আকবর, এফ ব্লকের আনিস উল্লাহ ও এজাহার, জি ব্লকের মো. জসিম। বাকি চারজন এখনো তাদের হাতে জিম্মি রয়েছে।

গত ২৬ আগস্ট রাতে আল-ইয়াকিন গ্রুপের নেতা নেছার আহমদের ছেলে সদ্য জেল ফেরত আবুল কালামকে অপহরণের জের ধরে একের পর এক সংঘর্ষ ও অপহরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আবুল কালামের স্ত্রী নুর জাহান বেগম শনিবার রাতে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী আবদুল হামিদসহ ১১ জনকে আসামি করে উখিয়া থানায় একটি মামলা করে।

মো. আমির নামে এক রোহিঙ্গা জানান, গত পাঁচ দিন ধরে অপহরণ, চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের ই-ব্লকের মোহাম্মদ ফরিদ ও এফ ব্লকের নুর হাশিম, মাস্টার মুন্না এবং আনরেজিস্টার্ড ক্যাম্পের আল-ইয়াকিন নেতা রফিক উদ্দিন, হাফেজ জাবেদ ও সাইফুলের মধ্যে অন্তঃকোন্দল শুরু হয়। এরপর থেকে ক্যাম্পের পরিবেশ অশান্ত হয়ে উঠে।

কুতুপালং আন-রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের মাঝি নুরুল বশর ঘটনার সত্যতার নিশ্চিত করে বলেন, সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় ১০-১২ জন আহত হওয়ার খবর শুনেছি। ঘটনার পর থেকে ক্যাম্পে মোবাইল নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে ঠিকভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ প্রসঙ্গে কুতুপালং রেজিস্টার্ড ক্যাম্পে নিয়োজিত এপিবিএনের পরিদর্শক সালেহ আহমদ পাঠান বলেন, ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের মাঝে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটে থাকে। গোলাগুলির বিষয়টি সঠিক নয়। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে বলে তিনি জানান।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে