ভিয়েতনামফেরত ৮১ জন অভিবাসী শ্রমিককে গ্রেফতার দেখিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়িতে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন শেষে এই শ্রমিকেরা বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। পুলিশ এসে তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে সোজা আদালতে নিয়ে যায়।
তুরাগ থানার ওসি মো. নুরুল মোস্তাকিম টেলিফোনে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে ভিয়েতনাম থাকাকালে কিছু অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কারণে ৫৪ ধারায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাদের ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়েছে।
তবে এই অভিবাসী শ্রমিকদের প্রত্যেকে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর ছাড়পত্র নিয়ে ভিয়েতনামে যান বলে জানিয়েছেন।
দালালের খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খোয়ানো ৮১ শ্রমিক ১৮ আগস্ট ভিয়েতনাম থেকে দেশে ফেরেন। বিশেষ একটি ফ্লাইটে ঢাকায় ফেরার পর থেকে দফায় দফায় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। নিয়মানুযায়ী দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টিন শেষ হয় আজ। তবে আরও দুদিন আগে থেকেই তারা যেখানে ছিলেন, সেখানে পুলিশের তৎপরতা বাড়ে।
কোয়ারেন্টিনে থাকা অভিবাসী শ্রমিক মো. আলমগীর গণমাধ্যমকে জানান, গত ৩০ আগস্ট পুলিশ তাদের আদালতে নেয়া হবে বলে জানান। কেন নেয়া হবে, এর কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়নি তারা। শ্রমিকেরা প্রত্যেকে চার-পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে ভিয়েতনামে যান। দালালেরা বলেছিলেন, ভিয়েতনামে সোফা ফ্যাক্টরিতে কাজ দেবেন। কিন্তু সেই কাজ তারা পাননি। ওখানে পৌঁছানোর পর ছোটখাটো দু-চারটে কাজ দিলেও কোনোটিই দীর্ঘমেয়াদী ছিল না। একপর্যায়ে তিনিসহ আরও অনেকে পুরোপুরি কর্মহীন হয়ে পড়েন। তারা আশা করছিলেন, প্রতারক রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দেশে ফেরত পাঠানোর দাবিতে মধ্য জুলাইতে এই শ্রমিকেরা ভিয়েতনামের ভুং তাও থেকে এক হাজার ৬৭৭ কিলোমিটার দূরের হ্যানয়ে এসে সেখানকার বাংলাদেশি দূতাবাসের সামনে অবস্থান নেন। পরিপ্রেক্ষিতে ভিয়েতনাম সরকার পাচারকারীদের বিরুদ্ধে তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এর আগে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ থেকে পাঠানো ২১৯ জনকেও দেশে ফেরার পর গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সরকার তাদের ক্ষমা করে দিলেও, দেশে এসে মুক্তি পাননি তারা।