রাজবাড়ীতে তরুণী চিকিৎসককে দলবেঁধে ধর্ষণের মামলায় তিন আসামিকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া আদালত দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছে।
আজ বুধবার রাজবাড়ীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক শারমীন নিগার এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রাজবাড়ী সদর উপজেলার মজলিসপুর গ্রামের মৃত আবুল মোল্লার ছেলে রানা মোল্লা, খানখানাপুর গ্রামের আরশাদ মোল্লার ছেলে মামুন মোল্লা ও মৃত মোন্নাফ সরদারের ছেলে হান্নান সরদার।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট উমা সেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে সাতটার দিকে ঢাকা থেকে নিজ গ্রামের বাড়ি যাওয়ার জন্য ওই তরুণী বাসে রাজবাড়ী সদর উপজেলার গোয়ালন্দ মোড়ে আসেন। সেখানে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর কোনো যানবাহন পাননি। ওই সময় আসামি রানা ও মামুন একটি অটোরিক্সা এনে কোথায় যাবেন জানতে চান। তরুণী গোপালগঞ্জ যাবেন জানালে তাকে ফরিদপুর পৌঁছে দিতে চান। তিনি রাজি হয়ে অটোরিক্সায় ওঠেন।
বসন্তপুর নামক স্থানে যাওয়ার পর আরেক আসামি হান্নানকে তোলা হয়। এর কিছু দূর যাওয়ার পর একটি নির্জন স্থানে অটোরিক্সা থামিয়ে আসামিরা তাকে টেনেহিঁচড়ে অটৈারিক্সা থেকে নামিয়ে আনে। তরুণী চিৎকার করতে থাকলে আসামিরা মাফলার দিয়ে তার মুখ হাত বেঁধে ফেলে। এরপর তাকে একটি বাঁশবাগানে নিয়ে রাতভর ধর্ষণ করে আসামিরা। ওই সময় তিনি অনেক কাকুতি মিনতি করেও রেহাই পাননি। একপর্যায়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
পরদিন ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোরে আসামিরা নির্যাতনের শিকার তরুণীকে রাস্তা দেখিয়ে দেয়। তিনি একটি বাসে উঠে ফরিদপুর র্যাব-৮ ক্যাম্পে গিয়ে অভিযোগ করেন। ওইদিনই র্যাব-৮ ফরিদপুর ক্যাম্পের সদস্যরা অভিযান চালিয়ে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। ধর্ষণের ঘটনায় তরুণী বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও তিন চারজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন।
মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করেন। আদালত সাক্ষ্য প্রমাণ ও কাগজপত্র পর্যালোচনা করে বুধবার এ রায় দেন। মামলার অন্য তিন আসামি আনিসুর রহমান, করিম মোল্লা ও কুটি মনিরকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।