টানা ১১ সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় শেয়ারবাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক

শেয়ারবাজার
শেয়ারবাজার

ঊর্ধ্বমুখী ধারায় থাকা শেয়ারবাজার আরও একটি সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্যদিয়ে পার করেছে। মূল্য সূচক বাড়ার পাশাপাশি গত সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। এতে বেড়েছে সবকটি মূল্য সূচক। সেই সঙ্গে বেড়েছে বাজার মূলধন। এর মাধ্যমে টানা ১১ সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী থাকল দেশের শেয়ারবাজার।

গত সপ্তাহজুড়ে সূচক ও বাজার মূলধন যে হারে বেড়েছে, লেনদেন বেড়েছে তার থেকে বেশি হারে। আগের সপ্তাহের তুলনায় প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন বেড়েছে প্রায় ২৮ শতাংশ। ফলে গড় লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

লেনদেনের এমন উত্থানের সপ্তাহে মূল্য সূচকও পিছিয়ে থাকেনি। ডিএসইর প্রধান মূল্য ও বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক এক শতাংশের ওপরে বেড়েছে। এর সঙ্গে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়ার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৭২ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল তিন লাখ ৬৯ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে দুই হাজার ৯৩১ কোটি টাকা।

এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৫৪ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১২ শতাংশ। এর মাধ্যমে টানা ১১ সপ্তাহ সূচকটি বাড়ল। ১১ সপ্তাহের টানা এই উত্থানে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে ৯৬৫ পয়েন্ট।

প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি টানা ১১ সপ্তাহ বেড়েছে ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক। শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত এ সূচকটি গত সপ্তাহে বেড়েছে ১১ দশমিক ২১ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৯ শতাংশ। এর মাধ্যমে টানা ১১ সপ্তাহের উত্থানে সূচকটি বাড়ল ২২৩ পয়েন্ট।

বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইর আরেকটি সূচক ডিএসই-৩০। এ সূচকটি গত সপ্তাহে বেড়েছে ২৫ দশমিক ৩১ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫০ শতাংশ। এর মাধ্যমে সূচকটি টানা সাত সপ্তাহ বাড়ল। টানা সাত সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছে ৩৪৬ পয়েন্ট।

এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৭৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৪টির। আর ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৫৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৮২৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ২৩১ কোটি ১ লাখ টাকা বা ২৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ।

আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে চার হাজার ২৩৯ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় চার হাজার ১৪৪ কোটি ২২ লাখ টাকা। সে হিসেবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৯৫ কোটি ২১ লাখ টাকা। আশুরা উপলক্ষে গত সপ্তাহে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হওয়ায় মোট লেনদেন কম হারে বেড়েছে।

গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনে ‘এ’ গ্রুপ বা ভালো কোম্পানির অবদান ছিল ৮১ দশমিক ৮১ শতাংশ। ‘বি’ গ্রুপের অবদান ১৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ, ‘জেড’ গ্রুপের ১ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ এবং ‘এন’ গ্রুপের ১ দশমিক ৭৮ শতাংশ।

গত সপ্তাহে ডিএসইর মূল বাজারে টাকার অংকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো, ব্র্যাক ব্যাংক, ওরিয়ন ফার্মা, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, গ্রামীণফোন, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স এবং ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং ফাইন্যান্স।

শেয়ার করুন

universel cardiac hospital

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে