বরিশালের উজিরপুরে নবজাতকের লাশ নিয়ে ফেরার পথে বাস-কাভার্ডভ্যান ও অ্যাম্বুলেন্সের ত্রিমুখী সংঘর্ষে ৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা সবাই অ্যাম্বুলেন্সের যাত্রী। দুর্ঘটনার পর অ্যাম্বুলেন্স কেটে তাদের লাশ বের করা হয়।
বুধবার বিকাল ৫টায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের আটিপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাউকাঠি এলাকার আরিফ হোসেন (৪০), তার মা কোহিনুর বেগম (৬০), আরিফের স্ত্রী শিউলি বেগম (৩৫), সদ্যপ্রসূত শিশু তামান্না (৩ দিন), আরিফের সহোদর মো. কাইয়ুম (৩৮) এবং অ্যাম্বুলেন্সের চালক মো. আলমগীর হোসেন (৩৮)। এছাড়া আরও এক ব্যক্তি নিহত হলেও তার কোনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। পুলিশের ধারণা অজ্ঞাত ব্যক্তিটি চালকের সহকারী হতে পারে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা থেকে লাশ এবং তার আত্মীয়স্বজন নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি ঝালকাঠি যাচ্ছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা গাজী রাইস মিলের একটি কাভার্ডভ্যানের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের সময় কাভার্ডভ্যানের পেছনে থাকা এমএম পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস কাভার্ডভ্যানের উপর আছড়ে পড়লে এটি ত্রিমুখী সংঘর্ষে রূপ নেয়।
উজিরপুর থানা পুলিশের ওসি জিয়াউল আহসান জানান, দুর্ঘটনাস্থল থেকে আমরা মোট ৭টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছি। এরা সবাই অ্যাম্বুলেন্সের যাত্রী। এদের মধ্যে সদ্যপ্রসূত এক শিশুর লাশও রয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সে পাওয়া একটি কাগজ অনুযায়ী মৃতদের মধ্যে একজন ঢাকার উত্তরার সিনিসিন হাসপাতালে ভর্তি ছিল। গত ৬ সেপ্টেম্বর তিনি একটি সন্তানের জন্ম দেন।
অ্যাম্বুলেন্সে যে নবজাতক শিশুর লাশ পাওয়া গেছে তার শরীরে তেমন কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। ধারণা করা হচ্ছে হাসপাতালে থাকা অবস্থায় শিশুটি মারা যায়। শিশু নবজাতকের লাশ নিয়ে ফেরার সময় অ্যাম্বুলেন্সটি দুর্ঘটনাকবলিত হয়।
ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিস এবং পুলিশের উদ্ধার কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। দুর্ঘটনার পর দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া অ্যাম্বুলেন্স কেটে লাশগুলো বের করা হয়। লাশগুলোর মধ্যে একজন নবজাতক শিশু, ২ জন নারী এবং ৪ জন পুরুষ। এদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।