সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের কারণে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে বলে দাবি করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বিভিন্ন দেশ থেকে জরুরি ভিত্তিতে পেঁয়াজ আমদানির কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই পর্যাপ্ত পেঁয়াজ দেশে পৌঁছবে। এক মাসের মধ্যে পেঁয়াজের বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। একই সঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরসহ দেশব্যাপী স্থানীয় প্রশাসনের নেতৃত্বে বাজার অভিযান জোরদার করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশে পেঁয়াজের মূল্য ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ট্রাকে করে পেঁয়াজ বিক্রি শুরু হয়। ঢাকাসহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানসহ দেশব্যাপী ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩০ টাকা করে বিক্রি করছে সরকারি এ প্রতিষ্ঠানটি। ফলে বাজারে পেঁয়াজের মূল্যে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। পেঁয়াজ বিক্রির এ কার্যক্রম আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
সেখানে বলা হয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় টিসিবির মাধ্যমে এবার পেঁয়াজ আমদানি ও বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে। বিশেষ করে টিসিবি এবার ই-কমার্সের মাধ্যমে পেঁয়াজ বিক্রয় করবে। পেঁয়াজের অবৈধ মজুত বা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে মূল্যবৃদ্ধির চেষ্টা করা হলে সরকার প্রচলিত আইনে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এদিকে চাহিদা মোতাবেক বাজারে পেঁয়াজের মজুত, সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে গত বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বেশকিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে পেঁয়াজ রফতানির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে কূটনীতিক মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য দেশটির পররাষ্ট্র সচিবকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আমদানিকৃত পেঁয়াজ স্থলবন্দর থেকে দ্রুততম সময়ে ছাড় করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে এনবিআরের চেয়ারম্যান এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আগামী বছরের মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজের ওপর ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আপাতত প্রত্যাহারের বিষয়ে সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ে পেঁয়াজের বিষয়ে দ্রুত সংনিরোধ সনদ ইস্যু শুরু করেছে।
আরও বলা হয়েছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর সার্বিক পরিস্থিতি মনিটরিং জোরদার করেছে। দেশের পেঁয়াজ উৎপাদনকারী জেলাসহ (ফরিদপুর, পাবনা, রাজবাড়ী, রাজশাহী, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর) সব জেলার প্রশাসকদের সরবরাহ ক্ষেত্রে যাতে কোনো ধরনের সমস্যা না থাকে, সে বিষয়ে মনিটরিং জোরদার করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়া পরিস্থিতি পরিদর্শন ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তিনজন যুগ্ম-সচিবকে উল্লিখিত জেলায় পাঠানো হয়েছে। প্রতিটি বন্দরে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকদের কাছে বাজার মনিটরিং জোরদার করতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পেঁয়াজ আমদানিকারকদের এলসি খোলাসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণা দেয় ভারত। এর পরই দেশের বাজারে বাড়তে থাকে এ নিত্যপণ্যের দাম। ঢাকাসহ দেশের বাজারে ইতোমধ্যে শতের কাছাকাছি পৌঁছেছে পেঁয়াজের দাম।