‘ক্ষমা করে দিও তুমি’, লাশবাহী গাড়ি ধরে মাহবুবে আলমকে স্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

‘ক্ষমা করে দিও তুমি’, লাশবাহী গাড়ি ধরে অ্যাটর্নি জেনারেলকে স্ত্রী
ছবি : সংগৃহিত

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার পর সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে তার লাশ রাজধানী মিন্টো রোডের অ্যাটর্নি জেনারেলের সরকারি বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে লাশ ঘিরে এক শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠে পরিবেশ।

universel cardiac hospital

সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে মাহবুবে আলমের লাশ নিয়ে তার বাসা থেকে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়ি সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণের উদ্দেশে রওনা হয়। এ সময় তার স্ত্রী বিনতা মাহবুব গাড়ির কাছে দৌড়ে আসেন।

অঝোরে কাঁদতে থাকেন। বিদায়বেলায় তিনি লাশবাহী গাড়ি ধরে বারবার বলতে থাকেন– ‘ক্ষমা করে দিও, ক্ষমা করে দিও তুমি; আমাকে ক্ষমা করে দিও।’

এ সময় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

তিনি গাড়ি ধরে বারবার ক্ষমা চাইতে থাকেন। আর প্রয়াস স্বামীকে উদ্দেশ্য করে বলতে থাকেন– ক্ষমা করে দিও। …

পরে স্বজনরা এসে বিনতা মাহবুবকে সরিয়ে নিয়ে যান। লাশবাহী গাড়ি সামনের দিকে যাওয়ার সময় বিনতা মাহবুব স্বামীর জন্য দোয়া পড়তে থাকেন।

প্রসঙ্গত, জ্বর ও গলাব্যথা নিয়ে ৪ সেপ্টেম্বর সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি হন রাষ্ট্রের প্রধান এ আইন কর্মকর্তা। ওই দিনই করোনা পরীক্ষা করলে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ১৯ সেপ্টেম্বর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান।

সোমবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) থেকে তার মরদেহ আনা হয়।

সুপ্রিম কোর্টের এ সিনিয়র আইনজীবী ১৯৭৫ সালে হাইকোর্টে আইন পেশায় যুক্ত হন। ১৯৯৮ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে ২০০১ সালের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন।

মাহবুবে আলম সুপ্রিম কোর্ট বারের ১৯৯৩-৯৪ সালে সম্পাদক ও ২০০৫-২০০৬ সালে সভাপতি নির্বাচিত হন। পরে ২০০৯ সালের ১৩ জানুয়ারি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান।

তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যা, জাতীয় চার নেতা হত্যা, সংবিধানের এয়োদশ ও ষোড়শ সংশোধনীসহ ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি করেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে