টাইগারদের পরবর্তী গন্তব্য নিউজিল্যান্ড

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড
ফাইল ছবি

দুদিন আগেও আশার কথা শুনিয়েছিলেন বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান। কিন্তু সংস্থার প্রধান নাজমুল হাসান আশার সেই প্রদীপ নিভিয়ে দিলেন, ‘ওরা (শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট) যে গাইডলাইন দিয়েছে, সেটা মেনে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলা সম্ভব না। ওদের জানিয়ে দিয়েছি নতুন সূচি পাঠাতে।’ তাতে ফেব্রুয়ারির শেষ ভাগের আগে আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সম্ভাবনা নেই বাংলাদেশ জাতীয় দলের। ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেই প্রস্তুতি নিতে হবে ফেব্রুয়ারি-মার্চে নিউজিল্যান্ড সফরের।

সোমবার মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম জন্মদিনের উদযাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নাজমুল হাসান জানিয়েছেন, ‘আমার মনে হয় আর কোনো সুযোগ (শ্রীলঙ্কা সফরের) নেই। কারণ আমরা আজকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দিয়েছি নতুন সূচি পাঠাতে। এর মানে এটা নিয়ে আর সময় নষ্ট করার দরকার নেই। ওরা (শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট) যদি পারত তাহলে এর মধ্যেই পারত (শ্রীলঙ্কার করোনা প্রটোকল শিথিল করতে)। বেশ কিছুদিন সময় চলে গেছে এর মধ্যে। আমরা বলেছি, রি-শিডিউল করতে, এটা এভাবে সম্ভব নয়। যখন পরিস্থিতি ভালো হবে, এমন শর্ত থাকবে না তখন আমরা খেলতে যাব।’

‘শর্ত’টা বহু চর্চিত। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে এ উপমহাদেশে সবচেয়ে সফল শ্রীলঙ্কা তাদের প্রণীত স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে অটল। বিদেশ থেকে আগত যে কাউকে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। দর-কষাকষির শুরুতে কিছুটা ছাড় দিয়ে সাত দিনের কোয়ারেন্টিনের পাল্টাপ্রস্তাব দিয়েছিল বিসিবি। সেটির পক্ষে সায় দিয়েছিলেন দেশটির ক্রীড়ামন্ত্রী। শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট (এসএলসি) সদলবলে গিয়েছিল করোনাকালের স্বাস্থ্যবিধি নিয়ন্ত্রণ করে যে টাস্কফোর্স, সেটির দপ্তরে। ওই দপ্তরের প্রধান আবার দেশটির সেনাবাহিনীর প্রধান। তিনি প্রস্তাবটি পর্যবেক্ষণের জন্য পাঠিয়ে দেন শ্রীলঙ্কার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছে। স্বভাবতই বিষয়টি যেহেতু স্বাস্থ্যগত, তিনি সেটি অনুমোদন করেননি।

গত পরশু বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে বিসিবিকে অবহিত করে এসএলসি। আর গতকাল আপাতত শ্রীলঙ্কা সফরের চিন্তাভাবনা থেকে সরে এসেছে বিসিবি। মাঝখানে এতগুলো দিন থেকে মিছে আশার বাণী শুনিয়ে। সফরের ভাবনা ‘ডিপ ফ্রিজে’ তুলে রাখার ঘোষণাকালে বোর্ডপ্রধানের কথায় তেমনই ইঙ্গিত, ‘ওরা যে গাইডলাইন দিয়েছে সেটি মেনে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলা সম্ভব না। এর পরও ওদের ক্রিকেট বোর্ড, ক্রীড়া মন্ত্রণালয় অনেক চেষ্টা করেছে, আমরাও ছাড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের বিষয়টিই আসল ছিল। আমরা কোয়ারেন্টিন আর আইসোলেশন দুটি বিষয় আলাদা করে দেখি। কোয়ারেন্টিনে আমরা শুধু আলাদা করে রাখি। কভিড-১৯ পজিটিভদেরই শুধু আইসোলেশনে রাখি, তাকে ঘর থেকেও বের হতে দেওয়া হয় না। ওদের ওখানে দেখছি ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন মানেই আইসোলেশন। ঘর থেকেই বের হতে পারবে না কেউ। এই অবস্থায় ১৪ দিন কোনো ক্রিকেটার ঘরে থাকলে তার শারীরিক অবস্থা পরে, মানসিক যে কন্ডিশন হবে সেটা থেকে বের হতেই অনেক সময় লাগবে। এটা পর্যটকদের বেলায়ও প্রযোজ্য। তাই আমরা যেটা চেয়েছিলাম সেটা ওরা দিতে পারছে না।’

আপাতত শ্রীলঙ্কা সফর গল্পের এখানেই যবনিকাপাত। এরপর কী? সে সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন নাজমুল হাসান, ‘আবার জাতীয় দলের ক্যাম্প শুরু হবে। এরপর ওরা নিজেদের মধ্যে তিনটি ম্যাচ খেলবে। প্রস্তুতি ম্যাচের পর আমরা ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু করতে যাচ্ছি। এরপর ছয়টি দলকে নিয়ে করপোরেট লিগ হতে পারে। নয়তো জাতীয় দল, হাইপারফরম্যান্স আর অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে নিয়ে বিসিবির তত্ত্বাবধানে একটা টুর্নামেন্ট হতে পারে। এরপর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের বাকি খেলাগুলো করারও পরিকল্পনা আছে।’

আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের ফেরা হবে ফেব্রুয়ারিতে, নিউজিল্যান্ড সফরের মধ্য দিয়ে। আজ-কালের মধ্যে সেখানে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির সূচিও হয়ে যাওয়ার কথা।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে