ধর্ষণের জন্য মেয়েকে না পেয়ে বৃদ্ধ বাবাকে পিটিয়ে জখম

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রতীকী ছবি

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নে তালাকপ্রাপ্তা তরুণীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে শামীম নামে এক যুবক। আবারও ধর্ষণের জন্য ওই তরুণীকে খুজতে এসে না পেয়ে বখাটেরা বৃদ্ধ বাবাকে রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে।

সোমবার রাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ আজ মঙ্গলবার সকালে মেয়েটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। তবে প্রধান অভিযুক্ত লম্পট শামীমকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

universel cardiac hospital

মঙ্গলবার দুপুর ২টায় এএসপি জগন্নাথপুর সার্কেল মাহমুদুল হাসান চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হল- গোতগাঁও গ্রামের লিটন মিয়া (৩২), আকাই মিয়া (২৮), আলম মিয়া (২৬) ও দিলাক মিয়া (২৬)।

তিনি আরও জানান, প্রধান অভিযুক্ত শামীমকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

পুলিশ, এলাকাবাসী ও নির্যাতিত বৃদ্ধের পরিবারের লোকজন জানান, সাত বছর আগে ওই মেয়ের বিয়ে হয় নবীগঞ্জ উপজেলার রাজারবাগ গ্রামের কবির মিয়ার সঙ্গে। দুই বছর পর তাদের মধ্যে দাম্পত্য বিরোধ দেখা দিলে একমাত্র পুত্রসন্তান নিয়ে মেয়েটি বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখানে এলে গ্রামের আংগুর মিয়ার বখাটে ছেলে শামীম মিয়া মেয়েটির ওপর নজর দেয়।

প্রায়ই ওই মেয়েকে উত্ত্যক্ত ও কুপ্রস্তাব দিত শামীম মিয়া। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মেয়েটির বাবা গোতগাঁও থেকে আলীগঞ্জ বাজারে একটি কলোনিতে ঘরভাড়া করে মেয়েকে নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। এক মাস আগে শামীম ওই কলোনি থেকে মেয়েকে তুলে নিয়ে যায়। কিছু দিন আটক রেখে ধর্ষণ করে। পরে মেয়েটি নবীগঞ্জ উপজেলার অভয়নগর গ্রামে গৃহপরিচারিকার কাজ নেয়।

সোমবার রাত ১টার দিকে শামীম তার লোকজন নিয়ে আলীগঞ্জ বাজারের কলোনিতে গিয়ে মেয়েটির খোঁজ করে। মেয়েকে না পেয়ে তার বৃদ্ধ বাবাকে (৬৮) রড দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। খবর পেয়ে পুলিশ বখাটেদের গ্রেফতারে অভিযান চালায়।

মেয়েটির বাবা জানান, শামীমের অত্যাচারে মেয়েকে নিয়ে তিনি অনেক দিন ধরে আতঙ্কের মধ্যে আছেন। বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করেও কোনো প্রতিকার পাননি। মেয়েকে ঘর থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে তার কাছে আটক রেখে ধর্ষণ করেছে। লোকলজ্জার ভয়ে মেয়েটি এখান থেকে নবীগঞ্জে গৃহপরিচারিকার কাজ নেয়। এতে শামীম ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে।

পাইলগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মখলেছুর রহমান জানান, শামীম এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে থানায় চুরি ও মাদকের মামলা রয়েছে। মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করা ও জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা খুবই আতঙ্কজনক। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

জগন্নাথপুর থানার এসআই জহির উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে ৪ আসামিকে গ্রেফতার ও নির্যাতিতা মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। মূল আসামি লম্পট শামীমকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে