স্কুলছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণ: পুলিশ সদস্যের যাবজ্জীবন

দিনাজপুর প্রতিনিধি

আদালত
ফাইল ছবি

দিনাজপুরে স্কুলছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণ করায় নবীউল ইসলাম (২৩) নামে শিল্প পুলিশের এক সদস্যকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

আজ বুধবার দুপুরে দিনাজপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সিনিয়র জেলা জজ শরীফ উদ্দিন আহমেদ এ রায় দেন।

universel cardiac hospital

দণ্ডপ্রাপ্ত নবীউল ইসলাম (২৩) দিনাজপুর সদর উপজেলার সাতাসাগর পানুয়াপাড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবল মো. জাফর আলীর ছেলে। একই মামলায় একজনকে চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয়। অপর দুজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল স্কুলে যাওয়ার পথে দিনাজপুর শহরের মহারাজা গিরিজানাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে বটতলা মোড় থেকে অপহরণ করা হয়।

ছাত্রীকে মাইক্রোবাসে তুলে অপহরণ করেন সদর উপজেলার মাতাসাগর পানুয়াপাড়া গ্রামের নবীউল ইসলাম (২৩), তার ভাই নুরুল ইসলাম ওরফে নুরু (২৮), ভাবি কাওসার ইয়াসসিন (২৪) ও নবিউল ইসলামের বাবা জাফর আলী।

এরপর রংপুরের বদরগঞ্জে জোরপূর্বক আটক রেখে ছাত্রীকে ফুসলিয়ে বিয়েতে রাজি করা হয়। অজ্ঞাত কাজি অফিসে নিয়ে গিয়ে নিকাহ রেজিস্টারে স্বাক্ষর নিয়ে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে বলে ছাত্রীকে জানানো হয়। এরপর ছাত্রীকে ঢাকায় নিয়ে আটকে রেখে দাম্পত্য জীবন শুরু করেন নবীউল।

২০১৪ সালের ১ আগস্ট দিনাজপুরে নিয়ে আসার কথা বলে ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশন থেকে সৈয়দপুর স্টেশনে আসার পর ছাত্রীকে নামিয়ে দেন নবীউল। সেখানে নবিউল ছাত্রীকে বলেন, তোমার সঙ্গে আমার বিয়ে হয়নি, তুমি বাড়ি চলে যাও।

এ সময় ছাত্রী চিৎকার করলে স্টেশনের লোকজন নবীউলকে আটক করে সৈয়দপুর থানা পুলিশে সোপর্দ করে। কিন্তু নবীউল পুলিশ সদস্য হওয়ায় সৈয়দপুর থানা পুলিশ একটি জিডি করে তাকে ছেড়ে দেয়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর নানি বাদী হয়ে ২০১৪ সালের ৪ জুলাই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নবীউল ইসলাম, তার ভাই নুরুল ইসলাম ওরফে নুরু, ভাবি কাওসার ইয়াসসিন ও নবিউল ইসলামের বাবা জাফর আলীকে আসামি করে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে নবীউল, নুরুল ইসলাম ও কাওসার ইয়াসসিনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয় পুলিশ।

সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে শিল্প পুলিশের সদস্য নবীউল ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। অন্য আসামিদের বেকসুর খালাস দেয়া হয়। সেই সঙ্গে নবীউল ইসলামকে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে