সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে রায়হান উদ্দিনের (৩৫) মৃত্যুর ঘটনায় সাময়িক বরখাস্তকৃত বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার মোবাইল নম্বর বন্ধ রয়েছে। তাকে খুঁজছে পুলিশ।
তবে গণমাধ্যমে সরাসরি এ ব্যাপারে কেউ বক্তব্য না দিলেও পুলিশের একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আকবর লাপাত্তা হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
মঙ্গলবার সকাল থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) একটি সূত্র জানিয়েছে।
নগরের আখালিয়ার নেহারিপাড়ার যুবক রায়হান উদ্দিনকে ফাঁড়িতে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় সোমবার (১২ অক্টোবর) আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। রাতে তাদের রাখা হয় মহানগর পুলিশের অস্ত্রাগারে।
সাময়িক বরখাস্তকৃত পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতিদিন সকালে পুলিশ লাইনে রিপোর্ট করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে তিনি রিপোর্ট করেননি। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন। তার মোবাইল নম্বরও বন্ধ রয়েছে।
এ ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়া অপর পুলিশ সদস্যরা হলেন বন্দরবাজার ফাঁড়ির কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাস।
প্রত্যাহার হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেন।
প্রসঙ্গত, শনিবার (১০ অক্টোবর) দিনগত রাতে রায়হানকে ধরে নিয়ে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে রোববার (১১ অক্টোবর) সকালে রায়হানকে ওসমানী হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান। তিনি সিলেট নগরের আখালিয়া নেহারিপাড়া এলাকার বাসিন্দা। ঘটনার প্রথম দিকে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ছিনতাইকালে গণপিটুনিতে মারা গেছেন রায়হান।
তবে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হান উদ্দিনকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে নিহতের পরিবার। এ ঘটনায় রোববার দিনগত রাত আড়াইটার দিকে এসএমপির কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি।
মঙ্গলবার বিকেলে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআইতে) স্থানান্তর করা হয়।
নিহত রায়হান উদ্দিন সিলেট নগরের আখালিয়ার নেহারিপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তার আড়াই মাসের এক মেয়ে রয়েছে। নগরের রিকাবিবাজার স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের চেম্বারে কাজ করতেন তিনি। তার সপরিবারে আমেরিকা যাওয়ার কাজ চলছিল বলে জানা গেছে।