প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও রাজার ক্ষমতা সীমিতকরণের লক্ষ্যে আন্দোলনকারীরা প্রধানমন্ত্রী প্রিয়ুথ চান ওচাকে তিন দিনের মধ্যে পদত্যাগের আলটিমেটাম দিয়েছেন বুধবার।
এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ না করলে আন্দোলন আরও তীব্র করার ঘোষণা দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী ওচা সুর নরম করে জরুরি অবস্থা তুলে নেয়ার ইঙ্গিত দেন। একই সঙ্গে তিনি আন্দোলনকারীদের বলেন, তারা যেন ঘৃণা ও বিভক্তি ছড়ানো কথাবার্তা বন্ধ করেন। এদিকে বৃহস্পতিবার সরকার জরুরি অবস্থা তুলে নিয়েছে। বিবিসি।
দুই সপ্তাহ আগে জরুরি অবস্থা ও কারফিউ জারি করেছিল সরকার। তাতে চারজনের বেশি মানুষের একসঙ্গে জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কয়েক মাস ধরে টানা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন বন্ধের উদ্দেশ্যে জরুরি অবস্থাটি জারি করা হয়।
সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়, যে সহিংস পরিস্থিতির কারণে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছিল তা মোটামুটি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। এ কারণে জরুরি অবস্থা তুলে নেয়া হয়েছে।
থাইল্যান্ডে রাজাকে খুব সম্মান করা হয় এবং দেশটি নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্রের দেশ। সেখানে রাজতন্ত্র ও রাজার বিরোধিতা ছিল কল্পনারও বাইরে।
কারণ রাজতন্ত্রের সমালোচনার বিরুদ্ধে আইন রয়েছে দেশটিতে। কিন্তু রাজতন্ত্রের বিরুদ্ধে এক ছাত্রী বিক্ষোভের ডাক দিলে এটি দ্রুত ছাত্রদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সরকার এই আন্দোলনে দমনপীড়ন শুরু করলে আন্দোলনকারীরা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন।
উল্লেখ্য, থাই প্রধানমন্ত্রী প্রিয়ুথ চান ওচা ২০১৪ সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন। তারপর গত বছর বিতর্কিত এক নির্বাচনে আবারও ক্ষমতাসীন হন তিনি। ছাত্রদের দাবির মধ্যে আছে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, নতুন নির্বাচন দেয়া এবং সংবিধানে সংশোধন আনা।
এছাড়া রাজার ক্ষমতা কমানোর দাবিও রয়েছে তাদের। এসব দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু হলে সরকার দমনের চেষ্টা করে। সে লক্ষ্যে জরুরি অবস্থা ও কারফিউ জারি করার আন্দোলন আরও তীব্র আকার ধারণ করে। মিছিল সমাবেশে মানুষের অংশগ্রহণ বাড়তে থাকে।
বৃহস্পতিবার সরকার জরুরি অবস্থা তুলে নিয়ে সুর নরম করার ইঙ্গিত দিলেও আন্দোলনকারী নেতারা বলেছেন, তারা প্রতিবাদ-বিক্ষোভ অব্যাহত রাখবেন। প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের আলটিমেটাম তাদের আন্দোলন চলমান রাখারই প্রমাণ।
আন্দোলনকারীরা যে দাবি আদায়ে শেষ পর্যন্ত অনড় তার প্রমাণ পাওয়া যায় বৃধবার গ্রেফতার হয়ে জামিনে মুক্তি পাওয়া নেতা পাতসারাভেলি তানাকিতভিবুলপোনের কথায়।
তিনি সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রিয়ুথের আর প্রধানমন্ত্রী থাকার বৈধ অধিকার-গ্রহণযোগ্যতা নেই। এই নেতা আরও বলেন, ‘গত ছয় বছরে মানুষের কল্যাণে তিনি কিছুই করেননি। তার ওপর আমাদের আর কোনো আস্থা নেই। সুতরাং তাকে গোটা মন্ত্রিসভা নিয়ে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।’