গবেষণায় জালিয়াতি: সামিয়া-মারজানদের শাস্তি নির্ধারণে দুই ট্রাইব্যুনাল

ঢাবি প্রতিনিধি

সামিয়া রহমান-সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজান।
ফাইল ছবি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিয়া রহমান, অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজান এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ওমর ফারুকের গবেষণায় করা জালিয়াতির শাস্তি নির্ধারণে দুটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার বিকালে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যায়ের নির্ধারিত সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সিন্ডিকেটের একাধিক সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান সভাপতিত্ব করেন।

universel cardiac hospital

সভায় উপস্থিত সিন্ডিকেট সদস্যরা জানান, সহযোগী অধ্যাপক সামিয়া রহমান ও অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সৈয়দ মাহফুজুল হক মারজানের যৌথ গবেষণায় জালিয়াতির শাস্তি নির্ধারণে এর আগের সিন্ডিকেট সভায় ট্রাইব্যুনাল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। তবে ট্রাইব্যুনালে কারা থাকবেন তা সেদিন নির্ধারিত হয়নি। আজকের সিন্ডিকেট সভা থেকে আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহকে চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যের একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। এই ট্রাইব্যুনালের বাকি দুইজন সদস্যের মধ্যে একজন হবেন বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের প্রতিনিধি থেকে এবং অন্যজন হবেন অভিযুক্তদের (সামিয়া-মারজান) পক্ষ থেকে। শিগগিরই ওই দুই সদস্যের নাম ঠিক করে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান ট্রাইব্যুনালকে নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেবেন। এটি সর্বোচ্চ আট সপ্তাহ পর্যন্ত হতে পারে।

তারা আরও জানান, চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে ২০১৮ সালে সিন্ডিকেটের এক সভা থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ওমর ফারুকের ডিগ্রি বাতিল করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি একাডেমিক কোনো শাস্তি পাননি। তার শাস্তি নির্ধারণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী ও সিন্ডিকেট সদস্য এ এফ এম মেজবাহ উদ্দিনকে চেয়ারম্যান করে আরও একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে। এর বাইরে কিছু নিয়োগ-পদোন্নতি-চাকরিচ্যুতির বিষয়ে সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

তবে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন ও অধ্যাপক ড. আবদুস সবুর খানের ফল জালিয়াতি, অধ্যাপক বাহাউদ্দিনের ভুলে ভরা গবেষণা ও একই গবেষণায় দুই ডিগ্রি, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান ওরফে বাহালুলের যৌন নিপীড়নে সর্বোচ্চ শাস্তির সুপারিশ, সংগীত বিভাগের অধ্যাপক লীনা তাপসী খান (মুহসীনা আক্তার খানম)-এর পিএইচডি গবেষণায় দুর্নীতির বিষয়গুলো সিন্ডিকেটে ওঠেনি বলে সূত্রে জানা গেছে।

জানতে চাইলে সিন্ডিকেট সভায় উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ বলেন, কমিটির তদন্তে সামিয়া ও মারজানের গবেষণায় চৌর্যবৃত্তির প্রমাণ পাওয়া গেছে৷ তাদের শাস্তি নির্ধারণে এর আগের সিন্ডিকেট সভায় ট্রাইব্যুনাল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল; কিন্তু ট্রাইব্যুনালে কারা থাকবেন, তা সেদিন নির্ধারিত হয়নি আজকের সিন্ডিকেট সভা থেকে আইন অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহকে চেয়ারম্যান করে তিন সদস্যের একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, চৌর্যবৃত্তির অভিযোগে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ওমর ফারুকের ডিগ্রি বাতিল হলেও তিনি কোনো শাস্তি পাননি। তার শাস্তি নির্ধারণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী ও সিন্ডিকেট সদস্য এ এফ এম মেজবাহ উদ্দিনকে চেয়ারম্যান করে আরও একটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে