ইতালিতে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়াল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইতালি
ছবি : ইন্টারনেট

করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ধাপের প্রাদুর্ভাবে বিপর্যস্ত ইতালি। প্রতিদিন বাড়ছে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা। করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ধাপের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে শুক্রবার থেকে কয়েকটি অঞ্চলে আবার নতুন করে লকডাউন শুরু হচ্ছে। বৃহস্পতিবার মৃত্যুর সংখ্যা ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মৃত্যুবরণ করেছে ৪৪৫ জন।

এ নিয়ে দেশটিতে করোনা ভাইরাসে মোট মারা গেছে ৪০ হাজার ১৯২ জন। এদিন মোট টেস্ট করা হয় দুই লাখ ১৯ হাজার ৮৮৪ জন। এর মধ্যে আক্রান্ত ৩৪ হাজার ৫০৫ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্ত আট লাখ ২৪ হাজার ৮৭৯ জন।

আজ শুক্রবার থেকে দেশের নয়টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান ও চারটি বিভাগীয় অঞ্চলকে ১৫ দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করেছে ইতালির সরকার।

বুধবার রাতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জুসেপ্পে কন্তে নতুন এক অধ্যাদেশে স্বাক্ষর করে এ তথ্য জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী স্বাক্ষরিত অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, অতীতের মতো আবারো সমগ্র ইতালিকে তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। যেসব অঞ্চলে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে সেসব অঞ্চলকে রেডজোনের তালিকায় আনা হয়েছে।

আক্রান্তের সংখ্যা একটু কম এমন অঞ্চলকে কমলা জোনের তালিকায় আনা হয়েছে। আর যেসব অঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা খুবই কম, সেসব অঞ্চলকে হলুদ জোনের আওতায় আনা হয়েছে।

বর্তমানে রেডজোনের তালিকাভুক্ত মিলানের বিভাগীয় অঞ্চল লম্বার্দিয়া, পিয়েমন্তে, ভালে দি অস্তা ও কালাব্রিয়া এ চারটি অঞ্চলে শুক্রবার থেকে জারি করা হয়েছে লকডাউন।

সরকারের ঘোষিত অধ্যাদেশ অনুযায়ী লকডাউনের সময় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া এসব অঞ্চলের কেউ ঘর থেকে বের হতে পারবে না।

এছাড়াও এ সময় রেডজোনের তালিকাভুক্ত অঞ্চল থেকে কেউ হলুদ বা কমলা জোনে যেতে ও আসতে পারবে না। তবে শুধুমাত্র চাকরি, শিক্ষা ও চিকিৎসার প্রয়োজনে প্রমাণসহ অন্য অঞ্চলে যাতায়াত করতে পারবে। এসব অঞ্চলে মুদিদোকান ও ফার্মেসিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান খোলা থাকবে।

বাচ্চাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হয়েছে। রেস্টুরেন্ট চালু থাকবে কিন্তু কেউ যেতে পারবে না। শুধুমাত্র অনলাইন এবং ফোনের মাধ্যমে খাবার অর্ডার করে বাসায় আনার অনুমতি দেয়া হয়েছে।

এসব বিধি-নিষেধ কিছুটা শিথিল রয়েছে কমলা জোনের জন্য। দেশটির গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল কাম্পানিয়া, লিগুরিয়া, ভেনেতো ও পুলিয়া রয়েছে এই কমলাজোনের তালিকায়। এসব অঞ্চলে রাত দশটার পর থেকে কেউ জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হতে পারবে না।

তবে রাত ১০টা পর্যন্ত রেস্তোরাঁ ও বার খোলা থাকলেও সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভেতরে বসে খাবার অনুমতি রয়েছে আর এরপর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত শুধুমাত্র খাবার অর্ডার করে বাসায় নিয়ে যাবার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তবে উৎসবের দিন সবকিছু বন্ধ রাখার নির্দেশ রয়েছে। আর হলুদজোনের অঞ্চলগুলোতেও কমলাজোনের মতো বিধিনিষেধ রয়েছে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে একটু শিথিলতা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর নতুন এ অধ্যাদেশ অনুযায়ী রেডজোনের লকডাউন ১৫ দিনের জন্য হলেও অন্যান্য জোনের বিধিনিষেধ ও পূর্বের অপরিবর্তিত বিধি-নিষেধ আগামী ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এমতাবস্থায় বাংলাদেশে আটকেপড়া সকল নতুন পারিবারিক ভিসাধারী, ভ্রমণ ও ব্যবসায়িক ভিসাধারীদের আগামী ৩ ডিসেম্বরের আগে ইতালিতে ফেরার সুযোগ নেই। বর্তমানে যে কোনো বৈধ ডকুমেন্টসধারী ইতালি থেকে তার নিজ দেশে যেতে ও আসতে পারবেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে