রাজধানীর আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে কর্মচারীদের পিটুনিতে পুলিশের সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিমের মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে রাজধানীর আদাবর থানায় মামলাটি করা হয়। পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা মামলাটি করেছেন বলে জানিয়েছেন আদাবর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুজ্জামান।
পরিবারের সদস্যরা জানান, পারিবারিক ঝামেলার কারণে আনিসুল মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। গতকাল সোমবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আনিসুলকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালটিতে ভর্তির কিছুক্ষণ পরই কর্মচারীদের পিটুনিতে তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেন পরিবার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় কর্মচারীরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন।
ঘটনার পর হাসপাতালের অ্যাগ্রেসিভ ম্যানেজমেন্ট রুমে তাকে মারধরের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায়, হাসপাতালে ঢোকার পরই আনিসুলকে ৬-৭ জন টেনেহেঁচড়া একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। হাসাপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মাথার দিকে থাকা দুজন হাতের কনুই দিয়ে তাকে আঘাত করছিলেন। এ সময় একটি কাপড়ের টুকরা দিয়ে শিপনের হাত পেছনে বাঁধা হয়। চার মিনিট পর তাকে যখন উপুড় করা হয়, তখনই ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন শিপন।
এ ঘটনায় গত রাতে প্রথমে ছয়জনকে আটক করে পুলিশ। পরে আরও একজনকে আটক করা হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র আনিসুল করিম ৩১ বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। এক সন্তানের জনক আনিসুলের বাড়ি গাজীপুরে। সর্বশেষ আনিসুল করিম বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনারে দায়িত্বে ছিলেন।
আনিসুল করিমের ভাই রেজাউল করিম বলেন, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগে ভুগছিলেন আনিসুল। কিন্তু সেগুলো গুরুতর নয়। হাসপাতালে পিটুনিতেই তার মৃত্যু হয়েছে।