ছয় সপ্তাহের তুমুল যুদ্ধের পর আর্মেনিয়া-আজারবাইজান শান্তি চুক্তি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আজারবাইজান- আর্মেনিয়া
ফাইল ছবি

নাগার্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আজারবাইজানের সঙ্গে ছয় সপ্তাহের তুমুল যুদ্ধে হাজারো প্রাণহানির পর শান্তি চুক্তি করেছে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান। যুদ্ধ অবসানে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় হওয়া এই চুক্তি অনুযায়ী অধিকৃত অঞ্চল থেকে সমস্ত সেনা প্রত্যাহার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আর্মেনিয়া।

সোমবার (১০ নভেম্বর) শেষ বেলায় আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশনিয়ান যুদ্ধ সমাপ্তি ঘোষণা দেন।

universel cardiac hospital

দেশটির এমন পদক্ষেপে আর্মেনীয় নাগরিকরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। রাজধানী ইয়েরেভানে বিক্ষোভ করেন, এমনকি তারা বেশ কয়েকটি সরকারি ভবনে ভাঙচুর করে। খবর আনাদুলু এজেন্সি ও আরটি।

দুদিন আগে আর্মেনিয়া সমর্থিত নাগার্নো-কারাবাখের বিচ্ছিন্নতাবাদী সরকার আজারবাইজানের বাহিনীর কাছে সেখানকার দ্বিতীয় বৃহত্তম শুশা শহর হারানোর পর শান্তি চুক্তি ও সেনা প্রত্যাহারের এ সিদ্ধান্ত এলো।

বিতর্কিত ওই অঞ্চলটিকে আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের বলে স্বীকৃতি দেয়া হলেও সেটির নিয়ন্ত্রণ রয়েছে আর্মেনিয়ার নৃ-গোষ্ঠীর হাতে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার দেশ দুটি যখন আলাদা হয় তখন থেকেই এই বিবাদ চলছে। নব্বইয়ের দশকের যুদ্ধের পর ১৯৯৪ সালে এটি আর্মেনিয়ার দখলে চলে যায়।

ব্যাপক লড়াই ও যুদ্ধের পর ওই বছর দুই দেশের মধ্যে অস্ত্রবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল কিন্তু শান্তি চুক্তি হয়নি। নতুন করে সই হওয়া এই শান্তি চুক্তি মঙ্গলবার স্থানীয় সময় ১টা থেকে কার্যকর হবে।

নতুন চুক্তি অনুযায়ী চলমান সংঘাতে নাগোরনো-কারাবাখের যেসব এলাকা আজারবাইজান দখলে নিয়েছে সেগুলো তাদের দখলেই থাকবে।

আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী সম্মত হয়েছেন যে, তার দেশ আজারবাইজানের কাছে আগামী ১৫ নভেম্বরের ভেতরে কিছু অঞ্চল ছেড়ে দেবে। এছাড়া ১ ডিসেম্বরের মধ্যে আরো ও কিছু অঞ্চল ছাড়া হবে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুসারে নাগার্নো-কারাবাখ অঞ্চলে রাশিয়া ফেডারেশন ১৯৬০ জনের একটি শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করবে এবং তাদের কাছে ক্ষুদ্রাস্ত্র ও ৯০টি আর্মর্ড পার্সোনাল ক্যারিয়ার, ৩৮০টি অটোমোবাইল এবং বিশেষ সরঞ্জাম থাকবে।

যুদ্ধ অবসানের ঘোষণায় প্রধানমন্ত্রী পাশনিয়ান বলেন, এই চুক্তিকে পরাজয় হিসেবে গণ্য করা ঠিক হবে না।

পুতিনের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ জানিয়েছেন, এই শান্তি প্রক্রিয়ায় তুর্কি সেনারাও অংশ নেবে।

পুতিন বলেছেন চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধবন্দী বিনিময় করবে উভয় পক্ষ। এ ছাড়া অবরুদ্ধ থাকা সকল অর্থনৈতিক ও পরিবহন ব্যবস্থা স্বাভাবিক করে দেয়া হবে। এই চুক্তির ঐতিহাসিক মূল্য অনেক বলে উল্লেখ করেছেন আজেরি প্রেসিডেন্ট।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে