‘ম্যারাডোনা ১০’ লেখা জার্সি পড়ে মাঠে নামল নাপোলি

ক্রীড়া ডেস্ক

ম্যারাডোনা ১০ জার্সি

ফুটবলের রাজপুত্র দিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যুতে শোকে মূহ্যমান ফুটবল বিশ্ব। চোখের কোনে জল নিয়ে বৃহস্পতিবার আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির শেষযাত্রায় সামিল হয়েছেন হাজার হাজার অনুরাগী। দিয়েগোর মৃত্যুসংবাদে যেমন কান্নায় ভেঙে পড়েছে বুয়েনস আয়ার্স, একই চিত্র ধরা পড়েছে তাঁর সেকেন্ড হোম ন্যাপেলসে। যেখানে ঘরে ঘরে ঈশ্বর রূপে পূজিত হন ফুটবল ঈশ্বর দিয়েগো আর্মান্দো ম্যারাডোনা।

তবে ‘দ্য শো মাস্ট গোজ অন’। ফুটবল ঈশ্বরের স্মৃতিতে নীরবতা পালনের মধ্যে দিয়ে ফুটবল চলছে গোটা বিশ্বজুড়ে। কারণ ফুটবলই বোধহয় দিয়েগোকে সম্মান জানানোর শ্রেষ্ঠ মাধ্যম। ঘরের ছেলেকে হারানোর বেদনাকে সঙ্গী করেই এদিন ইউরোপা লিগে মাঠে নেমেছিল দিয়েগোর ক্লাব নাপোলিও। এই ক্লাবকে বিশ্বের দরবারে যে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ম্যারাডোনাই। ১৯৮৭ এবং ১৯৯০ ইতালির এই ক্লাবকে কার্যত একার কাঁধে ইতালি সেরা করেছিলেন আর্জেন্টাইন ফুটবল মায়েস্ত্রো। তাই ম্যারাডোনাকে সম্মান জানিয়ে বৃহস্পতিবার এক অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করল নাপোলি ফুটবল ক্লাব।

ঘরের মাঠ স্তাদিও সান পাওলো স্টেডিয়ামে এদিন দিয়েগোকে সম্মান জানিয়ে নাপোলির এগারোজন ফুটবলার মাঠে নামলেন ‘ম্যারাডোনা ১০’ লেখা জার্সি গায়ে চাপিয়ে। ফুটবল ঈশ্বরকে সম্মান জানানোর জন্য এর চেয়ে অভিনব পন্থা বোধহয় আর হতে পারত না। ক্রোয়েশিয়ার ফুটবল ক্লাব রিজেকার বিরুদ্ধে এদিন বাকায়োকো, কৌলিবালি প্রত্যেকের জার্সির পিছনে লেখা ছিল ‘ম্যারাডোনা ১০’। দিয়েগোর স্মৃতির উদ্দেশ্যে নীরবতা পালনের মধ্যে দিয়েই শুরু হয় ম্যাচ। ক্রোয়েশিয়ার দলটির বিরুদ্ধে ২-০ ব্যবধানে ম্যাচ জেতে নাপোলি। ইতোমধ্যেই সান পাওলো স্টেডিয়ামকে সদ্য প্রয়াত ম্যারাডোনার নামে নামাঙ্কিত করার কথা ঘোষণা করেছেন ন্যাপেলসের মেয়র।

উল্লেখ্য, তিন দশকেরও বেশি সময় আগে যার হাত ধরে প্রথম ইতালি সেরা হয়েছিল শহরের ক্লাব (নাপোলি), সেই দিয়েগোর চলে যাওয়া ন্যাপেলসের মানুষের কাছে স্বজন হারানোর বেদনার থেকে কোনও অংশে কম নয়। ১৯৮৪ বার্সেলোনা ছেড়ে ন্যাপেলসে আগমণ ঘটেছিল বছর তেইশের ম্যারাডোনার। নাপোলি তখন ছন্দহীন, দেশের প্রিমিয়ার ডিভিশন ফুটবল লিগে টিকে থাকার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে। দিয়েগো আসতেই যেন কোনও এক জাদুকাঠির ছোঁয়ায় বদলে গিয়েছিল সবকিছু।

আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ এনে দেওয়ার পরের বছরেই ম্যারাডোনা ইতালি সেরা করেছিলেন নাপোলিকে। ১৯৯০ আবার সেরা নাপোলি। মাঝে ১৯৮৮-৮৯ উয়েফা কাপ ঘরে এসেছিল ইতালির ক্লাবটির। ব্যস ম্যারাডোনার হাত ধরে ওইটুকুই। এরপর থেকে আজও নাপোলি তাঁর হৃত সম্মান পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে