ইয়েমেনের রাজধানী সানায় প্রায় ৯ মাস ধরে বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন পাঁচ বাংলাদেশিসহ ২০ নাবিক। গত ফেব্রুয়ারি থেকে তারা সেখানে বন্দি রয়েছেন। এদের মধ্যে একজন মুর্শিদাবাদের একটি জাহাজের সহযোগী ক্রু। তিনি সেখানে বন্দি হওয়ার তিন মাস পর তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হয়েছেন।
তার পরিবারের লোকজন রাজস্থানের ভারতপুরের তালগ্রামে বাস করেন। তিনি তার পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরই ওই নাগরিকদের বন্দি থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
গত বছরের ডিসেম্বরে বেঙ্গালুরুভিত্তিক একটি জাহাজ কোম্পানিতে যোগ দেন হিরন শেখ সিদ্দিকি। তিনিসহ ২০ জন ফেব্রুয়ারিতে ইয়েমেনে আটকা পড়েন। পরবর্তীতে গত মে মাসে তিনি তার বাড়িতে ফোন করেন। হিরন শেখ জানান, তিনি ছাড়াও বন্দিদের মধ্যে আরও ১৩ জন ভারতীয় নাবিক রয়েছেন। এছাড়া বাংলাদেশের পাঁচজন এবং মিসরের একজন নাবিকও তাদের সঙ্গে বন্দি জীবন-যাপন করছেন।
তারা গত ৩ ফেব্রুয়ারি ওমান থেকে সৌদি আরবের উদ্দেশে রওনা করেছিলেন। যাত্রা করার কিছুদিন পর খারাপ আবহাওয়ার কারণে তারা ইয়েমেন বন্দরে নোঙ্গর ফেলতে বাধ্য হন। তারা সে সময় এটা ভুলে গিয়েছিলেন যে, এটা একটি যুদ্ধ-বিধ্বস্ত এলাকা। সামগ্রিক বিপদের কথা সে সময় তাদের মাথায়ই ছিল না।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি ইয়েমেনের উপকূলরক্ষী বাহিনীর পরিচয়ে বেশ কয়েকজন ওই নাবিকদের বন্দি করে নিয়ে যায়। তাদের সেখান থেকে সানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং তখন থেকেই একটি হোটেলে বন্দি করে রাখা হয়। তাদের কাছ থেকে তাদের পাসপোর্ট এবং জাহাজের সব কাগজপত্র নিয়ে যাওয়া হয়।
হিরন শেখের বাবা-মা জানিয়েছেন, এতদিন ধরে তাদের ছেলে কেমন আছে সে বিষয়ে তাদের কোনো ধারণাই নেই। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে, বন্দিদের মধ্যে ভারতের কেরালার দুজন, মহারাষ্ট্রের সাতজন, তামিলনাড়ুর দুজন, একজন উত্তরপ্রদেশের, একজন রাজস্থানের এবং একজন পুদুচেরির।
কর্ন সুবর্ন ওয়েলফেয়ার সোসাইটি নামে ভারতের একটি এনজিও সংস্থা বলছে, তারা এ বিষয়টি জানতে পেরেছে এবং গত ১৬ নভেম্বর এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ওই এনজিওর সেক্রেটারি মতিউর রহমান বলেন, ‘আমরা নাবিকদের দুরাবস্থার কথা জানতে পেরেছি। আমরা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ওই ক্রু সদস্যদের মুক্তির জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আমাদের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।’