সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের ওপর হামলা হয়েছে। কুষ্টিয়ায় তারা যেটি করেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও মধুদার ভাস্কর্যের ওপর হামলা চালিয়েছে। এটা যারাই করবে ও যারা ধৃষ্টতা দেখাবে তাদের চরম মূল্য দিতে হবে।
সোমবার বেলা পৌনে ১২টায় সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক ইস্যুতে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় রাজধানীর ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ কাজ চলবে বলেও জানান তিনি। বলেন, ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ চলবে। আমরা ভাস্কর্য নির্মাণ করব। তারা যে প্রস্তাব দিয়েছে এটা তাদের বিষয়। ভাস্কর্য বিভিন্ন দেশে হয়েছে, সেখানে কেউ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেনি। হয়তো বৈধ একটি সংস্থা থেকে অনুমতি নিতে হয় সেটা এক বিষয়। আর আনুষ্ঠানিকভাবে ভাস্কর্য আমরা উদ্বোধন করিনি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের ঘটনা যারা ঘটাবে, এটা তো অবশ্যই সংবিধান ও রাষ্ট্রদোহের শামিল। কারণ বঙ্গবন্ধু তো আমাদের জাতির পিতা। দেশে দেশে যেখানে সৌদি আরব, কাতার, মিশর, ইরান, তুরস্ক, পাকিস্তানেও ভাস্কর্য আছে। ভাস্কর্য মুসলমান দেশগুলোতেও আছে। তাদের চেয়েও কি আমরা বড় মুসলমান! তারা তো সেখানে ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলে না। আর মূর্তি হলো দেবতার পূজা একটা, আর এখানে ভাস্কর্য তো মানুষের ভাস্কর্য। দেবতাকে তো পূজা করা হয়, কিন্তু এখানে তো মানুষকে পূজা করা হচ্ছে না। কাজেই এটাকে তারা কেন এভাবে নিচ্ছে।
আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন থাকতে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন মামলা করতে হলো, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কে মামলা করল সেটা বিষয় না। এটা নন পলিটিক্যালরা করাই ভালো, বঙ্গবন্ধু তো শুধু কোনো দলের না।
কাউকে হুকুমের আসামি করা হবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপযুক্ত প্রমাণ না পেলে কাউকে ভিক্টিমাইজ করা উচিত না। কেউ হুকুম দিয়েছে এমন কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমরা সরকারে আছি, ক্ষমতায় আছি। আমাদের ঠান্ডা মাথায় এগুতে হবে। কথায় কথায় মাথাগরম করলে চলবে না। বুঝেশুনে আমাদের পরিস্থিতিটা সামাল দিতে হবে। কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে এখানে আবার আমাদের দেশে ধর্ম আবার গুরুত্বপূর্ণ ও সেনসেটিভ ইস্যু। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং বিষয়গুলো দেখছেন ও সেভাবে ট্যাকল করছেন। অহেতুক দেশে অশান্তি-বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চাই না। আমরা যুক্তি দিয়ে বলতে চাই। প্রধানমন্ত্রী তাদের সাক্ষাৎ দেবেন কি না সেটি আমি জানি না। আলোচনার সুযোগ আছে কি না সেটাও প্রধানমন্ত্রী দেখছেন। সব বিষয়েই সরকারপ্রধান যদি মনে করেন তাহলে হতে পারে। তিনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, শাপলা চত্বরে হেফাজতের ব্যানারে একটা আন্দোলন হয়েছিল। সেটা তো দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। মুসলিম দেশগুলোতে মাঝে মাঝে এ ধরনের ধর্মীয় ইস্যু চলে আসে, এর পেছনে রাজনৈতিক কারণও আছে। আমরা এগুলো অবজারভ করছি। এখন তো বাংলাদেশের সামাজিক, সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবাদ করছে। কিছু কিছু বিষয় আমাদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা উচিত।
হেফাজতের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তাদের কওমি মাদরাসার ১৪ লাখ স্টুডেন্ট আছে। তারা মেইনস্ট্রিম থেকে দূরে আছে। তাদের আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার মেইনস্ট্রিমে আনার জন্য দাবিটাকে ন্যায়সম্মত মনে হয়েছে। সে জন্য তাদের দাবি মেনে নেয়া হয়েছে। তার মানে এই নয় তাদের সাথে সমঝোতা করেছি। হেফাজত কোনো রাজনৈতিক সংগঠন নয় যে তাদের সাথে রাজনৈতিক সমঝোতা করব।