আগামীকাল বৃহস্পতিবার বসছে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর শেষ স্প্যান। সেতুর ৪১তম স্প্যান ভাসমান ক্রেনের সাহায্যে বুধবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের কাছে নিয়ে নোঙর করে রাখা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কাল শেষ স্প্যানটি সেতুতে বসতে যাচ্ছে।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী ও প্রকল্প ব্যবস্থাপক (মূল সেতু) দেওয়ান আবদুল কাদের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে দুপুরের পর মাওয়া কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ৩ হাজার ৬০০ টন ধারণক্ষমতার ভাসমান ক্রেন ‘তিয়ান-ই’ শেষ স্প্যানটি নিয়ে রওনা হয়। এরপর বিকেল সাড়ে ৫টার পর ক্রেনটি নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে পৌঁছায়। স্প্যানটি ছয়টি ক্যাবলের (তার) মাধ্যমে ভাসমান ক্রেনের ওপর অবস্থান করছে।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, কাল (বৃহস্পতিবার) আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে পিলারের উপর স্প্যানটি বসানো হবে। প্রথমে ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের মধ্যবর্তী স্থানে স্প্যান বহনকারী ভাসমান ক্রেনটি পজিশনিং করবে। এরপর স্প্যানটি ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে তোলা হবে পিলারের উচ্চতায়। পরে রাখা হবে দুটি পিলারের বেয়ারিংয়ের ওপর। স্প্যানটি বসানোর জন্য ধাপগুলো সফলভাবে সম্পন্ন হলেই দৃশ্যমান হবে পদ্মা সেতুর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার।
প্রকৌশলী দেওয়ান আবদুল কাদের আরও বলেন, আমাদের নির্দিষ্ট শিডিউল অনুযায়ী আজ সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং সেই মোতাবেক চলবে। কাল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। যার অপেক্ষায় স্বপ্ন বুনছে বাংলার মানুষ। আশা করি, সবকিছু সঠিকভাবেই সম্পন্ন হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর পিলারে প্রথম স্প্যান বসানো হয়। প্রথম স্প্যান থেকে শুরু করে ৩৯তম স্প্যান বসানো পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময় ছিল তিন বছরের ওপর।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে পদ্মা সেতুর কাঠামো। সেতুর উপরের অংশে যানবাহন ও নিচ দিয়ে চলবে ট্রেন।
মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদী শাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।