দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি আপনাদের সবাইকে বলবো, যেকোনো পরিস্থিতি সহনশীলতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হয়, সেটাই করতে হবে। কে কী বললো না বললো, সেগুলো শোনার চেয়ে আমরা কতটুকু দেশের জন্য করতে পারলাম, সেটাই আমাদের চিন্তায় থাকবে। তাহলে আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবো, সঠিক কাজ করতে পারবো এবং সেভাবেই করে যাচ্ছি।
বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে কেউ কেউ কথা ওঠানোর চেষ্টা করছে। বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ সমান সুযোগ নিয়ে চলবে। সব ধর্মের মানুষ এক হয়ে মুক্তিযুদ্ধে রক্ত ঢেলে দিয়ে এ দেশ স্বাধীন করেছে। কাজেই এ দেশের মাটিতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার নিয়েই বসবাস করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই মাটিতে হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সব ধর্ম আছে। অর্থাৎ আমরা এখন মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ আছি বলে অন্য ধর্মাবলম্বী যারা, তাদের অবহেলার চোখে দেখবো, তা নয়। মনে রাখতে হবে, সকলে এক হয়ে মুক্তিযুদ্ধে একইসঙ্গে রক্ত ঢেলে দিয়ে এ দেশ স্বাধীন করেছে। কাজেই এ দেশের মাটিতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার নিয়েই বাস করবে। যার যার ধর্ম পালনের স্বাধীনতা তার থাকবে এবং সেই চেতনায় আমরা বিশ্বাস করি। ইসলাম আমাদের সেই শিক্ষাই দিয়ে থাকে। নবী করিমও (সা.) আমাদের সেই শিক্ষাই দিয়ে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, ঠিক বিজয়ের প্রাক্কালে আমাদের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল। ঠিক যখন যুদ্ধটা শুরু, তারপর থেকে এই বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা শুরু হয়। ৮ ও ৯ ডিসেম্বর থেকে তারা শুরু করেছিল এবং ১৪ তারিখ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করি।
বাবা-মাসহ সব ভাইদের হারানোর কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি জানি হারানোর বেদনা কত কঠিন। অনেকে তো লাশও পাননি। আবার ৭৫-এর পর জাতির পিতাকে শুধু হত্যা করেনি, আমাদের আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের বহু নেতাকর্মীকেও নির্মমভাবে হত্যা করেছে। অনেকের লাশও পাওয়া যায়নি। এই নির্যাতন তো চলছে। অগ্নিসন্ত্রাস থেকে শুরু করে নানাভাবে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, সবকিছু আমরা দেখেছি।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে আলোচনা সভায় যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। অপর প্রান্তে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, কেন্দ্রীয় নেতা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফীসহ দলীয় নেতারা বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে দলীয় কার্যালয় থেকে বক্তব্য রাখেন। এ সময় দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাও কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন।